শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
শসা এই সবজিটির সাথে আমরা সকেলেই পরিচিত, শসা আমরা সাধারণত সালাত ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করি। কিন্তু এই শসা খাওয়ার অজানা কিছু উপকারিতা রয়েছে পাশাপাশি এই শসার কিছু অপকারিতাও রয়েছে, সেই সম্পর্কেই আজকের এই আর্টিকেল।
শসা খাওয়ার উপকারিতা
★ শসা শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে, ধরেন আপনি কোথাও বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেলেন, সেখানে পানি পাচ্ছেন না, তখন আপনি যদি একটি শসা খেতে পারেন, তাহলে আপনার পিপাসাও মিটে যাবে, কেননা শসার অধিকাংশই পানি।
★ আপনার শরীরের ভিতরে যদি কোনো চাপ বা গরম অনুভব হয়, জ্বালা পোড়া হয়, তাহলে আপনি একটি শসা খেলে আপনার জ্বালা পোড়া কমে যাবে।
★ শসা শরীরের ভিতরের বিষাক্ত বস্তু সমূহকে ধ্বংস করে দেয়, আমরা কত কিছুইনা খাই সেই সাথে বিষাক্ত বস্তুও আমাদের পেটে যেতে পারে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
চোখের জ্যোতি বাড়াতে শসার উপকারিতা
চোখের জ্যোতি বাড়াতে শসা খেতে পারেন, আর শসা যদি পাতলা করে কেটে চোখের পাতার উপর লাগিয়ে রাখেন, তাহলে আপনার চোখের পাতা সুন্দর হবে, সেই সাথে আপনার চোখকে জীবাণুর কবল থেকেও রক্ষা করবে।
পার্লারে গেলে দেখতে পাবেন চোখের উপর তারা শসা দিয়ে রাখে, কেননা এভাবে শসা দেওয়ার ফলে এতে চোখের সজীবতা ফিরে আসে, এবং সেই সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
সুতরাং আপনার চোখকে যদি সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে চান তাহলে আপনিও শসা ব্যবহার করুন। শসা খেলে মুখের দূর গন্ধ দূর হয়ে যায়, যাদের মুখে দূর গন্ধ আছে, ব্রাশ করেও কোনো উপকার পাচ্ছেন না, তারা শসা খাওয়া শুরু করে দেন, ১০০% আপনার মুখের দূর গন্ধ দূর হয়ে যাবে। শসা খেলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং ক্যান্সার ও লিভারের সমস্যাও দূর করে।
ওজন কমাতে কিভাবে শসা খাবেন?
শসা একটি পুষ্টিকর খাবার, কিন্তি এই শসা কিভাবে খেলে আপনার অতিরিক্ত ওজন কমবে এবং শরীরও ভালো থাকবে, শসাতে রয়েছে অনেক পরিমাণে এন্ট্রি অক্সিজেন, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী, সুতরাং ওজন কমানোর জন্য কোনো রকম চিন্তা ভাবনা ছাড়াই আপনি শসা খেতে পারেন।
এবার চলুন খাওয়ার নিয়মটা জানা যাক, ভাত খাওয়ার আগে আপনি শসার সালাত খাবেন এতে আপনার ভাতের চাহিদা কমে যাবে, আর শরীরেরও কোনো ক্ষতি হবেনা, কেননা শসাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন।
আপনি চাইলে শসা পুদিনাপাতা আপেল এগুলোকে ব্লেন্ডারের মাধ্যমে শরবত বানিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন, সাধ পাওয়ার জন্য আপনি চিনি বা মধুও মিশ্রিত করতে পারেন। এছাড়াও আপনি যেকোনো সময় কচি শসা খেতে পারেন, এতে আপনারই উপকার হবে।
ডায়বেটিস কমাতে শসার ব্যবহার
শতকরা ৭০% মানুষেরই এখন ডায়বেটিস দেখা দিচ্ছে, শরীরে অতিরিক্ত ভুরি চর্বির কারনে ডায়বেটিস আরো বেশি বাড়তেছে, গ্রামের মানুষের আবার ডায়বেটিস খুব কমেই হয়, কেননা তারা পর্যাপ্ত পরিশ্রম ও কাজ কর্ম করে থাকে।
তো ডায়বেটিস থেকে রক্ষা পেতে আপনাকে অনেকিছু খাবার বর্জন করতে হবে, তো আমি আজকে সেই বিষয় লিখতেছি না, তো আপনি যেই সমস্ত খাবার ডায়বেটিস এর জন্য নিষেধ সেগুলো খাবেন না, পাশাপাশি হাটা ছড়া করার চেষ্টা করবেন।
ঘরোয়া উপায়ে ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পেতে শসার অনেক উপকার রয়েছে, যেমন আপনি সকালে নাস্তার বদলে শসা খাবেন, শসার সাথে পেয়ারাও খেতে পারেন, আর বেশি বেশি চিনি ছাড়া লেবুর শরবত খাবেন। মিস্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।
রাত্রে শসা খেলে কি হয়?
শসা সাধারণত আমরা দিনের বেলাই খেয়ে থাকি, তবে রাত্রে শসা খাওয়ায় ক্ষতি হয়। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার গন গবেষণা করে বলেছেন, রাত্রে শসা খাইলে উপকারের থেকে ক্ষতির আশংকা বেশি, কেননা শসা হজম হতে অনেক সময় লাগে।
তাই রাতে যদি আপনি শসা খান সেই ক্ষেত্রে হজম হবেনা, ফলে আপনাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, যেমন পেট ভারি হয়ে যাবে, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। সুতরাং আপনি রাত্রি বেলায় শসা খাবেন না, বরং দিনের বেলায় নিশ্চিন্তে শসা খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে শসার ব্যবহার
কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগিনা এমন লোক পাওয়া খুবই কম, আমরা মুটামুটি প্রায় সকলেই এই সমস্যার সম্মুখীন। এই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে আপনি শসা খাওয়া শুরু করে দেন, শসা খেলে আশা করি আপনি দুই দিনেই আপনি ফলাফল পাবেন, আপনি নিয়মিত প্রতিদিন সকালে শসা খেতে পারেন, শসার সাথে পেয়ারাও খেতে পারেন।
শসার অপকারিতা
আমরা এতক্ষণ জানলাম শসার উপকারিতা সম্পর্কে, কিন্তু এই শসারই আবার ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। যেমন আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য শুধু সারাদিন শসাই খেতে থাকেন, তাহলে আপনার ওজন ঠিকই কমবে কিন্তু আপনার শরীরের ক্ষতি হয়ে যাবে, শরীরের পুষ্টি কমে যাবে, রক্ত শুন্যতা দেখা দিবে, আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে।
তাছাড়া শসা খাওয়ার পর আপনি কখনোই পানি খাবেন না, কেননা শসার মধ্যে রয়েছে ৯০% পানি, সুতরাং শসা খাওয়ার সাথে সাথেই আপনি পানি পান করবেন না, বরং শসা খাওয়ার ১৫/২০ মিনিট পর পানি পান করুন।