গাস্তের আদব বলার পদ্ধতি
আমরা অনেকেই আছি যারা ইসলাম সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে কিন্তু কথাবার্তা বলতে পারিনা, তাবলীগ জামাতে গিয়ে গাস্তের আদব ছয় নম্বরের বয়ান মানুষকে কিভাবে দাওয়াত দিতে হয় এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে আমরা অনেকে অজ্ঞ। অর্থাৎ আমাদের ভিতরে অনেক কিছু আছে কিন্তু আমরা তা মানুষের সামনে প্রকাশ করতে পারি না, তাবলীকে গেলে দেখা যায় অনেক সময় গাস্তের আদব বলতে হয়, তো কিভাবে গাস্তের আদব বলতে হয়, কিভাবে বয়ানটা করতে হয়, কিভাবে নামাজের পরে গাস্তের জন্য এলান দিতে হয়, সেই ব্যাপারেই আমি আজকে লিখব।
গাস্তের আদব বলার পদ্ধতি
মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে অনেক অনেক শুকরিয়া যে, আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আপনাকে আমাকে জামাতে সাথে আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করছেন, এজন্য আমরা সকলেই অন্তত একবার সেই আল্লাহতালা শুকরিয়া জ্ঞাপন করি আলহামদুলিল্লাহ। এই দুনিয়াতে আমরা আসছি অল্প কিছুদিনের জন্য, আমাদের পিতৃপুরুষ যারা ছিল তারা এখন দুনিয়াতে নেই, একদিন আমরাও আবার দুনিয়াতে থাকবো না এই দুনিয়া থেকে ছেড়ে চলে যেতে হবে।
কিন্তু এই দুনিয়া থেকে ছেড়েছে যাব আল্লাহর কাছে আমরা কি নিয়ে যাবো, কি নিয়ে আমরা আল্লাহর কাছে গিয়ে দাঁড়াবো, সেই বিষয়টার প্রতি আমাদের ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। এই পৃথিবীর বুকে মহান আল্লাহপাকের কাছে একমাত্র ধর্ম অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম।
আর এই ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য আল্লাহ পাকের দিকে মানুষ ধাবিত হওয়ার জন্য, যুগে যুগে আল্লাহ পাক অসংখ্য অগণিত নবী রাসূল পয়গম্বর দেরকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, আল্লাহপাক যত নবী রাসুল পাঠিয়েছেন প্রত্যেকেই তারা একটি কথার উপরে দাওয়াত দিয়েছে আল্লাহপাকের তাওহীদের উপর।
আর এমনিভাবে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ কেউ দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন তাওহীদের দাওয়াত দিয়ে, নবী রাসুলগণ সারাটা জীবন আল্লাহপাকের প্রতি মানুষকে দাওয়াত দিয়ে গেছেন, এর মধ্যে তারা অনেক কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন, কিন্তু তারা দাওয়াতের কাজকে ছাড়েনি। কিন্তু আজকে নবী রাসুলগণ নেই এবং আমাদের নবী হচ্ছে আখেরী নবী অর্থাৎ আমাদের নবীর উপর আর কোন নবী আসবেনা, বিধায় এই দাওয়াতের কাজ এখন আমাদের সকলের উপর।
আমাদের সকলের জিম্মায় দাওয়াতের কাজ বর্ধিত হয়েছে, এবং এ দাওয়াতের কাজকে আমাদের সঠিকভাবে পালন করতে হবে। যতদিন মানুষকে দিনের পথে দাওয়াত দেওয়া হবে অর্থাৎ দাওয়াতের কাজ চালু থাকবে, ততদিন আল্লাহ পাক এই পৃথিবীকে সস্তানে রাখবেন, আর যখনই দাওয়াতের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে অর্থাৎ আল্লাহ এবং আল্লাহর দ্বীনের পথে মানুষকে দাওয়াত দেওয়া হবে না, তখনই আল্লাহ পাক এই পৃথিবীকে ঠিক রাখবেন না।
যতদিন দাওয়াত থাকবে ততদিন ইসলাম থাকবে আর যখন দাওয়াত থাকবে না তখন ইসলাম তথা আল্লাহর দ্বীনও থাকবে না। বলা হয় একটা মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যেমনিভাবে তার হাত পা কান নাক মুখ শরীলে রক্ত ইত্যাদি প্রয়োজন হয় দীনের জন্য দাওয়াত এর চাইতে আরো বেশি জরুরী।
মাছ বেঁচে থাকার জন্য পানি লাগবে, অর্থাৎ পানি ছাড়া মাছ বাঁচতে পারে না, মাছ বেঁচে থাকার জন্য যেমনিভাবে পানি অবশ্যই অবশ্যই প্রয়োজন, আল্লাহর দিনকে তথা ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য দাওয়াত এর চাইতে আরো অনেক অনেক বেশি প্রয়োজন। তো ভাইয়েরা চাচারা এই দিনের দাওয়াতের জন্য আমরা সকলেই তো রাজি আছি ইনশাল্লাহ, সব কাজেরই একটা সিস্টেম আছে নিয়ম নীতি আছে তেমনি ভাবে দাওয়াত দেওয়ার একটা নিয়ম আছে.
আপনাদের মধ্যে হতে একজন রাহোবর হলে আমাদের জন্য ভালো হয়, রাহাবর ভাই কোন একটা মানুষকে দুনিয়াবির কাছ থেকে ফারেগ করে আমাদের জিম্মাদার ভাইয়ের কাছে তুলে দিবে, তারপর জিম্মাদার ভাই তাকে তিন পাতার উপর দাওয়াত দিবে আল্লাহ পাকের একত্ববাদ, পরকাল সম্পর্কে ও রাসুলের অনুবাদ সম্পর্কে।
এবং এক ভাই মসজিদে ঈমানের কথা বলবে, আরেকজন জিকিরে থাকবে এমনিভাবে আরেকজন ইস্তেকবালে থাকবে। যদি মহল্লা ছোট্ট হয় তাহলে ডান দিক থেকে যাবে ও বাম দিক দিয়ে চলে আসবে, আর যদি মহল্লা বড় হয় তাহলে এক মাথা থেকে শুরু করে তারপর দাওয়াত দিতে দিতে একদম মসজিদের দিকে চলে আসবে। আর দাওয়াত দিবে শুধু জিম্মাদার সাহেব, আর বাকিরা জিকির করতে করতে রাস্তা দিয়ে চলবে এবং নিজ দিকে তাকিয়ে থাকবে, ডান বামে কখনো তাকাবে না।
গাস্তের এলান দেওয়ার পদ্ধতি
যখন ইমাম সাহেব নামাজ শেষ করে সালাম ফিরাবে, তখনই আপনি দাঁড়িয়ে যাবেন এবং গাস্তের জন্য এলান দিবেন। তো এলান দেওয়ার পদ্ধতিটা হচ্ছে এই- ইনশাআল্লাহ বাকি দোয়ার পরে মসজিদে ঈমান আমল ও জরুরী বয়ান হবে, এবং আমাদের জামাত মহল্লায় গাস্তে যাবে, ইনশাআল্লাহ সকল ভাই বসার চেষ্টা করি বসলে অনেক ফায়দা হবে।