সকালে ঘুমালে কি কি ক্ষতি হয়
প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা সকালে ঘুমাই, আবার অনেকেই আছে যারা কিনা ফজরের নামাজ না পড়েই সকালে ঘুমিয়ে থাকে। সারারাত জেগে মোবাইল টিপাটিপি বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা ইত্যাদির কারণে মধ্য রাতে কিংবা প্রায় শেষ রাতের দিকে শুইলে সকালে ঘুম থেকে উঠা মুশকিল, তাই অনেকের মনেই এই প্রশ্ন জেগে থাকে যে সকালে ঘুমালে কি কোন ক্ষতি হয়? কিংবা সকালে ঘুমালে কি কি ক্ষতি হতে পারে।
তো আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করেছেন এবং আমাদের নবী বলেছেন সকালটা হচ্ছে খুবই কল্যাণকর, যে কারণে আমাদের নবী যদি কোন কাফের সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিত অথবা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হত তাহলে কিন্তু সকালে রওনা দিতেন কেননা সকালের সবকিছুই বরকতময় হয়। হযরত ইবনে আব্বাস হইতে বর্ণিত তিনি সর্বদায় সন্তান সন্ততিদেরকে যদি দেখতেন যে সকালবেলায় ঘুমাইতেছে তাহলে হযরত আব্বাস তার সন্তানদেরকে বলতেন তোমরা কি এখনো ঘুমাচ্ছ? আর এখন ঘুমিয়ে তোমাদের রিজিকের বন্টন হারাচ্ছ, অর্থাৎ সকালবেলায় রিজিকও বন্টন করা হয় যে কারণে ইবনে আব্বাস তার সন্তানদেরকে সকালে ঘুমানো থেকে নিষেধ করতেন।
তাছাড়া প্রমুখ সাহাবী হইতে বর্ণিত তিনি বলেন আল্লাহর রাসূল সা: কখনোই সকালে ঘুমাতেন না এবং তিনি সকালে ঘুমানো কে পছন্দ করতেন না কোন রকমের উজর ছাড়া, যেমন অসুস্থতার কারণে। সাহাবী বলেন আমি একটি ব্যবসার কাজের সাথে সম্পৃক্ত, আর আমি আমার ব্যবসার কাজের জন্য সকালেই ঘর থেকে বাহির হয়ে পড়তাম আর সকালে ঘর থেকে বাহির হওয়ার কারণে আমার ব্যবসার মধ্যে বরকত হতো, এবং আমি ব্যবসার মাধ্যমে প্রচুর লাভবানও হয়েছি।
সকালে ঘুমালে কি কি ক্ষতি হতে পারে
সকালের বাতাস অর্থাৎ ভোরের আবহাওয়াটা খুবই আরামদায়ক হয় যে আবহাওয়া টা সকলের ভাগ্যে জোটে না অর্থাৎ সকলেই সেই নরম আবহাওয়া কোমল বাতাসটা অনুভব করতে পারে না, যারা নাকি ফজরের নামাজ পড়ে তারাই একমাত্র সেই আবহাওয়াটা সম্পর্কে বলতে পারবে, যদি বলা হয় সকালের আবহাওয়া অর্থাৎ ঠান্ডা বাতাসটা শরীরের জন্য এত আরাম দায়ক কেন? এর উত্তরে বলা হয় সকালবেলা মুনাফিকরা ঘুমিয়ে থাকে আর মুমিন ব্যক্তিরা মসজিদে নামাজ পড়তে আসে, আর যেহেতু মোনাফেকরা ঘুমিয়ে থাকে সেই ক্ষেত্রে আবহাওয়ার মধ্যে মুনাফিকের শরীরের গন্ধ লাগে না বিদায় সকালের আবহাওয়াটা অনেক আরামদায়ক ও কোমল হয়ে থাকে।
তাছাড়া আগেকার যুগের কৃষক শ্রমিক যারা ছিল তারা কিন্তু সকালবেলায় কাজ করে ফেলত, অর্থাৎ আগেকার যুগের লোকেরা ফজরের নামাজের পর তারা জমিতে কাজ শুরু করতো দেখা যেত দশটা পর্যন্ত কাজ করে তারা বাড়িতে চলে আসতো, আর তখন হিসাব করলে দেখা যায় তারা এই সকাল টাইমে যতটুকু কাজ করেছে, বাকি সারাদিনই এতটুকু কাজ করতে পারে না, তাই সকালে ঘুমানো থেকে সময়টা কাজে লাগানো উচিত কেননা সকালে যেকোনো কাজ করলেই সেই কাজের মধ্যে বরকত হয় যেমনটি আমরা রাসূল ইসলামের হাদিসের মাধ্যমেও উল্লেখ করেছি।
আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করেন মাদ্রাসায় যে ছোট ছোট বাচ্চারা হেফজ পড়ে, অর্থাৎ কোরআন শরীফ মুখস্ত করে তারা কিন্তু সকালবেলায় মুখস্ত করে থাকে, কেননা সকালের টাইমটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ যে কারণে খুব অল্প সময়েই ছোট ছোট বাচ্চারা কোরআনের আয়াত পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা মুখস্ত করে থাকে।
আবার এখন অনেকেই বলতে পারেন যে সকালে ঘুমানো টা কি হারাম কিংবা নাজায়েজ কিছু আছে? তো এই কথার উত্তর হচ্ছে সকালে ঘুমানো টা হারাম না বরং সকালে ঘুমানো টা মাকরুহ আর মাত্র হচ্ছে অপছন্দনীয়।
আপনি সকালে ঘুমাতে পারেন সেই ক্ষেত্রে কোন রকমের কোন বাধা নেই, কিন্তু সকালবেলায় না ঘুমানো টাই অন উচিত কেননা সকাল বেলার কাজের মধ্যে অনেক বরকত রয়েছে, এমনকি সকাল বেলায় রিজিক্য বন্টন করা হয়ে থাকে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে, তাই আমরা সকলেই চেষ্টা করব সকালবেলা না ঘুমিয়ে নিজেদের কাজকর্ম করার জন্য, আর অবশ্যই আমরা ফজরের নামাজ আদায় করে তারপর কাজে নামব, এত করে সমস্ত কাজের মধ্যেই আল্লাহপাক বরকত দান করবে।