তাবলীগ জামাত সঠিক না ভুল
তাবলীগ জামাত করা ১০০% সঠিক, আমাদের অনেক জেনারেল শিক্ষিত ভাই আছে যারা নাকি তাবলীগ সম্পর্কে বেশি জানেনা, ইউটিউবে এবং ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও দেখে তারা এক ধরনের বিপাকে পড়ে গেছে যে, তাবলীগ জামাত আসলেই সঠিক নাকি ভুল?
তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে মানুষ সফর করে, যারা দিন সম্পর্কে তেমন ভালো জানেনা তাদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিচ্ছে, ইসলামের সঠিক বিধানগুলো তাদেরকে শিক্ষা দিতেছে, কিভাবে চললে আল্লাহকে পাওয়া যাবে এবং কিভাবে চললে আল্লাহ নারাজ হবে সেই বিষয়গুলোই তাবলীগ জামাতের লোকেরা মানুষদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে।
আরো একটা কথা যারা তাবলীগ জামাতে যায় অর্থাৎ বাড়ি ছেড়ে সফর করে তাদের কি তাবলীগ জামাতে যাওয়ার মধ্যে কোন স্বার্থ আছে? তাহলে যদি কোন স্বার্থই না থাকে তাহলে কেন তারা তাবলীগ জামাতে যায়? তারা একমাত্র তাবলীগ জামাতে যাই আল্লাহর দ্বীনকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য, মানুষের মধ্যে দিনের সঠিক আকীদা বাস্তবায়ন করার জন্য।
তাবলীগ জামাত কি জায়েজ?
তাবলীগ জামাত অবশ্যই জায়েজ, ওই ব্যক্তিদের চাইতে উত্তম আর কারা হতে পারে যারা নাকি মানুষকে দ্বীনের পথে আহবান করে। আর তাবলীগের লোকেরা একমাত্র মানুষদেরকে দ্বীনের প্রতি আহবান করতেছে, সুতরাং এখানে তাবলীগ হারাম হওয়ার কোন অবকাশ নেই, বরং তাবলীগ করা জায়েজ এবং ভালো কাজ।
তাবলীগ জামাত সম্পর্কে ভ্রান্ত মতবাদ
অনেকেই মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য এভাবে মতামত দেয় যে, যখন মুসলমানরা তাবলীগ তথা জামাতের মাধ্যমে বাহির হয়ে বিভিন্ন ধর্মের কাফের মুশরিক দেরকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দেয় তখন এটাকে বলা হয় তাবলীগ। আর যখন কোন মুসলমান আরেকজন মুসলমানকে ইসলামের দাওয়াত দেয় এবং ইসলামের হালাল-হারাম ইত্যাদি সম্পর্কে অবগত করে তখন এটাকে বলে তালিম।
তারা এমন মতবাদ দিয়ে মানুষের মধ্যে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে, তারা বলে প্রচলিত তাবলীগের মাধ্যমে মানুষ আরেকজন মুসলমান ভাইকে দিনের পথে আহবান করা এটা কিছুতেই তাবলীগ হতে পারে না, বরং তাবলীগ হচ্ছে বেদ্বীনদেরকে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া।
আমাদের মতবাদ
তারা বলে যে একমাত্র ভিন্ন ধর্মালম্বীদের কাছেই দিনের দাওয়াত পৌঁছানোরকি তাবলীগ বলে। এই কথার উত্তর হচ্ছে আমাদের উপর নামাজ রোজা হজ যাকাত ইত্যাদি ফরজ করা হয়েছে, কিন্তু আপনার চতুর পাশে চেয়ে দেখেন আল্লাহপাকের এই বিধানগুলো কতজন মুসলমান ভাই সঠিকভাবে পালন করতেছে, আপনার আশেপাশে তাকিয়ে আপনি অবশ্যই দেখবেন যে, মুষ্টিময় কতগুলো লোক এগুলো পালন করতেছে আর বাকিরা এগুলো থেকে দূরে সরে রয়েছে। মুসলমান হয়েও যারা আল্লাহ পাকের হুকুমগুলো মানতেছে না তাদেরকে দাওয়াত দেওয়া আপনার মতে কি সঠিক মনে হয় না??
তাছাড়া যখন আমাদের মুসলমান ভাইয়েরা আল্লাহপাকের হুকুমগুলো পালন করতেছে না, সেই সময় আমরা যদি ভিন্ন ধর্মালম্বীদের কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে যায় তখন অবশ্যই তারা বলবে, আগে নিজের ঘর সামলাও তারপর আমাদের কাছে এসো, অর্থাৎ তারা বলবে তোমাদের মুসলমান ভাইয়েরাই আল্লাহর হুকুমগুলো পালন করে না তোমরা আগে গিয়ে তাদেরকে দাওয়াতের জন্য আহ্বান করো, তারপর আমাদের কাছে দিনের দাওয়াত নিয়ে আসো।
আর সেই কারণেই আমরা মুসলমান হয়েও যারা আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ অর্থাৎ দ্বীনের হুকুম আহকামুল সঠিকভাবে পালন করতেছি না মূলত তাদেরকে বোঝানোর জন্যই তাবলীগ জামাত বাহির হয়। আর এই তাবলীগ জামাত বাহির হওয়ার ফলে ঐ সমস্ত মুসলমান ভাইদেরকে দ্বীন সম্পর্কে তাগিদ দেওয়ার ফলে তারা দিনের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতেছে।
নিঃসন্দেহে এই তাবলীগ তথা দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাওয়া জায়েজ হবে, যদি এটাকে অনেকে তালিম তথা তরবিয়ত বলে আখ্যা দিয়েছেন, কিন্তু একটা তালিম নয় বরং তাবলীগ। কেননা আমরা মুসলমান এবং আমাদের সমস্ত মুসলমান ভাইয়েরা যখন দিনের উপর পরিপূর্ণ প্রবেশ করব তখনই কেবল ভিন্নধর্মলম্বীদের কাছে দাওয়াত দিতে হবে, তা না হলে তারাই তো আমাদেরকে উল্টা দাওয়াত দিবে বলবে তোমাদের ভাইদেরকে আগে ইসলামের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করাও।
সুতরাং তাবলীগ জামাত হারাম নাজায়েজ এ কথাটার কোন ভিত্তি নেই, বরং তাবলীগ জামাত হযরত ইলিয়াস রহমাতুল্লাহি আলাইহি চালু করেছিলেন, এবং এই তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে মানুষের উপকার হয়েছে, অনেক মানুষ এই এই দাওয়াত দেওয়ার ফলে তারা ইসলামের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করেছে, সুতরাং তাবলীগ করা জায়েজ এবং একটা উত্তম কাজ।