আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন মুসলমানদের ওপর অর্থাৎ যারা আল্লাহ পাকের উপর ঈমান এনেছে তাদের উপর পাঁচটি বিষয়কে ফরজ করে দিয়েছেন। আর এই পাঁচটি ফরজ বিষয়ের মধ্যে হইতে অন্যতম একটি হচ্ছে রোজা, যেই রোজা আদায় করার জন্য আল্লাহ পাক আমাদেরকে আদেশ করেছেন। এবং আমাদেরকে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এই রোজার বদলা নিজের হাত দ্বারা দিবেন যদিও অন্যান্য সওয়াবের বদলা ফেরেশতাদের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
অন্য পোস্ট মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব
তাই সেই রোজা কে আমাদেরকে যথাযথভাবে রোজার হক আদায় করে পালন করতে হবে। তো আমাদের মধ্যে অনেক ভাইয়েরা আছে এমনকি বোনেরাও আছে যারা রোজা হালকা অর্থাৎ মাকরুহ হওয়ার কারণসমূহ জানে না, আর সেই কারণেই অনেকেই অনলাইনে সার্চ করে থাকে যে রোজা হালকা হওয়ার কারণসমূহ কি কি? মূলত আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেলে আমি যে সমস্ত কারণে রোজা হালকা হয়ে যায় সে সমস্ত কারণগুলো লিপিবদ্ধ আকারে উল্লেখ করব।
রোজা হালকা হওয়ার কারণসমূহ কি কি
রোজা হালকা হওয়ায়র অনেকগুলো কারণেই বর্ণিত রয়েছে কিন্তু আজকে আমরা রোজা হালকা হওয়ার ১৮ টি কারণ সম্পর্কে জানব, আর এই 18 টি কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
1. যদি কোন রোজাদার ব্যক্তি রোজা রাখা অবস্থায় কারো গীবত করে অথবা পরনিন্দা করে তাহলে ওই ব্যক্তি রোজা হালকা হয়ে যাবে।
2. রোজা রেখে অন্য কোন ব্যক্তিকে গালিগালাজ করা।
3. রোজা রাখা অবস্থায় রোজাদার ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা।
4. মুখের মধ্যে আটা জাতীয় বা এমন কোন বস্তু রেখে সবসময় চিবানো, যা কখনো ফাটেও না এমনকি গলেও না এবং তার কোন সাধও পাওয়া যায় না।
5. রোজাদার ব্যক্তি যদি মুখের মধ্যে থুতু জমিয়ে তারপর গিলে ফেলে তাহলে তার রোজা হালকা হয়ে যাবে, তবে স্বাভাবিক পর্যায়ের থুথু গিলে ফেললে রোজা হালকা হবে না।
6. রোজা রাখা অবস্থায় বিষণ্ণত ভাব কিংবা কাঁত্রতা অভাব ইত্যাদি প্রকাশ করা
7. মুখের মধ্যে অন্য যে কোন বুঝতে সব সময় দিয়ে রাখলে রোজা হালকা হয়ে যায়।
8. কোন কিছুর স্বাদ গ্রহণ করা, তবে যদি কোন মহিলার স্বামী খুবই খারাপ হয় কিংবা বদমেজাজি হয় তাহলে ওই মহিলার জন্য জায়েজ আছে তরকারি টেস্ট করা বা সাত গ্রহণ করা।
9. টুথপেস্ট মাজন কিংবা এই জাতীয় আরো অন্যান্য বস্তুর দ্বারা নিজের দাঁত ব্রাশ করা বা মাজন করা।
10. রোজার দুর্বলতা কাটানোর জন্য বা দুর করার জন্য খাবারের মধ্যে স্যালাইন বা এই জাতীয় অন্য কিছু ব্যবহার করা।
11. প্রস্রাব কিংবা পায়খানা করার সময় প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণে পা ফাঁকা করে নেওয়া এতে রোজা হালকা হয়ে যায়।
12. যদি রোজাদার ব্যক্তি রক্ত দেওয়ার পর শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় সে ক্ষেত্রে তার রোজা হালকা হয়ে যাবে বা মাক্রু হবে, কিন্তু তার শরীর যদি দুর্বল না হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তবে সমস্যা নেই।
13. যদি রোজা রাখা অবস্থায় সিঙ্গা লাগানো হয়, তবে সিঙ্গা লাগানোর কারণে যদি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে কেবল রোজা হালকা হবে অন্য তাই রোজা হালকা হবে না।
14. রোজা রাখা অবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে বারবার কুলি করা এবং নাকের নরম জায়গায় উপরে পর্যন্ত পানি পৌঁছানো তাহলে রোজা হালকা হয়ে যাবে বা মাক্রুহ হবে।
15. যদি কোন ব্যক্তির উপর গোসল ফরজ হয় তাহলে বিনা ও জোরে সুবহে সাদিক পর্যন্ত গোসল না করে থাকা।
16. নিজের বিবি কিংবা অন্য কারো মহিলার ঠোঁট মুখের মধ্যে নেওয়া।
17. নিজের বিবিকে চুমু দেওয়া কিংবা আলিঙ্গন করার দ্বারা যদি মনি বাহির হওয়ার আশঙ্কা থাকে সে ক্ষেত্রে রোজা হালকা হয়ে যাবে বা মাক্রুহ হবে, অন্যথায় মাক্রু হবে না।
18. কোন রকমের কাপড় ব্যতীত নিজের বিশেষ অঙ্গ কে অর্থাৎ বিবির বিশেষ অঙ্গের সাথে মিলালে রোজা হালকা হয়ে যাবে বা মাক্রুহ হবে।
অন্য পোস্ট তাবলীগের ৬ নম্বরের আলোচনা
শেষ কথা - রোজা হালকা হওয়ার কারণসমূহ
তো বন্ধুরা যে সমস্ত কারণে রোজা হালকা হয়ে যায় বা রোজাটা মাক্রু হয়ে যায় সে সমস্ত কারণগুলো আমি উপরে সুন্দরভাবে লিপিবদ্ধ করে উল্লেখ করেছি, আশা করি আপনি উপরোক্ত কারণগুলো মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং রোজা হালকা বা মাক্রু হওয়ার কারণ সমূহ জানতে পেরেছেন।
তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত হচ্ছে রোজা যেহেতু ফরজ সমূহের মধ্য হতে একটি অন্যতম ফরজ ইবাদত তাই আমাদের সকলেরই উচিত এই রোজাকে সঠিক এবং তার হক আদায় করে পালন করা। আর এই রোজাকে সঠিকভাবে আদায় করার জন্য উপরে যে সমস্ত কারণগুলো আমি উল্লেখ করেছি বাল লিপিবদ্ধ করেছি সেই সমস্ত কারণগুলো আমাদেরকে বর্জন করতে হবে। তাহলে কেবলমাত্র আশা করা যায় যে আমরা আংশিক কিছুটা রোজার হক মেনে রোজা আদায় করতে পেরেছি।
Tags
Islamic