ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত

ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত  ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে অনেক মানুষের এই প্রশ্ন উঠে তাই আজকে আমি ভাবলাম যে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কিছু লিখা যাক। ‌ হয়তোবা আমার আজকের এই আর্টিকেলটি যদি কোন ব্যক্তি পড়ার কারণে সে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি ধাবিত হয় বা ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে পারে তাহলে অবশ্যই এটা আমার জন্য উপকারী।  অন্য পোস্ট: তাবলিগের ৬ নম্বর বয়ান মাদরাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত  তাছাড়া ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কে মানুষদেরকে জানানো এবং অবগত করা আমাদের দায়িত্ব, তাই আজকে আমি আপনাকে অনুরোধ করব আপনি যেহেতু আমার আর্টিকেলটিকে ভিজিট করেই ফেলেছেন তাহলে অনুগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত পড়বেন, আশা করি আপনার সময়টুকু নষ্ট হবে না।  ধর্মীয় শিক্ষা কাকে বলে?  আমাদের সমাজে বর্তমানে এরকম একটা অবস্থা হয়েছে যে মানুষেরা মনে করে যে, ধর্মীয় শিক্ষা কেবলমাত্র হুজুরদের জন্যই আর অন্যান্য মানুষের ধর্মীয় শিক্ষার কোন প্রয়োজনই নেই। কথাটা বাস্তবে ঠিক এরকমই কারণ আমরা যে সমাজে বসবাস করি সে সমাজের বাস্তব চিত্রই আমি বলতেছি, অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষাটাকে মানুষেরা গুরুত্বই দেয় না। ধর্মীয় শিক্ষা বলতে আমরা কি বুঝি, বা ধর্মীয় শিক্ষা কাকে বলে?? ধর্মীয় শিক্ষা হচ্ছে দ্বীনি এলম বা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া, আর দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া টাকে ধর্মীয় শিক্ষা বলা হয়।  ধর্মীয় শিক্ষা কারা অর্জন করে?  আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি নিজেই তার পবিত্র কোরআনের মধ্যে বলতেছেন, আর পবিত্র কোরআন এটি হচ্ছে এরকম একটা কিতাব যা দুনিয়ার মধ্যে যত কিতাব নাযিল করা হয়েছে বা যত ধরনের কিতাব রয়েছে সমস্ত কিতাবের মধ্য হইতে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব হচ্ছে আল কুরআন এর চাইতে সম্মানিত আর কোন কিতাব এই পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়নি আর হবেও না।  সেই কোরআনে পাকের সূরা তওবার ১২২ নম্বর আয়াত ১১ নম্বর পৃষ্ঠার ৫ নাম্বার পৃষ্ঠার শেষের দিকে আল্লাহ তা'আলা বলেন, মুমিনদের জন্য উচিত নয় তারা সকলেই কোন একটা গ্রাম থেকে একসাথে কোন একটি অভিযানে বাহির হয়ে যাওয়া, পরবর্তীতে আল্লাহ পাক আবার বলতেছেন কেন একটা গোত্রের মধ্যে থেকে মুমিনরা দ্বীন অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষা লাভের জন্য বাহির হয় না? যারা তাদের গোত্রের লোকদেরকে আল্লাহ পাকের পরিচয় আখেরাতের পরিচয় ইসলামের পরিচয় সম্পর্কে অবগত করবে ধর্মীয় শিক্ষা লাভের পরে বা দ্বীন শিক্ষা অন্বেষণ করে আসার পরে।  অর্থাৎ আল্লাহ পাকের এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন এটাই বুঝাতে চেয়েছেন তোমাদের মধ্যে একদল লোক দ্বীনী এলেম শিক্ষা করার জন্য বাহির হইবে এবং দ্বীন এলেম শিক্ষা করার পর তোমাদেরকে ওই ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে অবহিত করবে এবং জানাবে। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের তৈরি করা জান্নাত জাহান্নাম কবর হাশর পুলসিরাত মিজান ইত্যাদি ও আরো বিভিন্ন মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে।  কেননা যারা ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে তারা কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে খুব ভালোভাবে গবেষণা করে এবং ইসলামের মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করে যে সমস্ত মাসলা মাসায়েল তারা পরবর্তীতে তাদের গোত্রের মধ্যে গ্রামের মধ্যে এসে মানুষদেরকে শিক্ষা দিবে। এবং তাদেরকে আল্লাহ পাক প্রদত্ত এই সমস্ত এলেম বা এ সমস্ত বিষয় শিক্ষা দেওয়ার পর হয়তোবা একটি গোত্র মহল্লা বা জাতি সতর্ক হবে অর্থাৎ আল্লাহ পাকের দিকে ফিরে আসবে। এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে প্রত্যেক মহল্লা থেকে কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক সম্মানিত ব্যক্তিরাই দ্বীনী আলেম শিক্ষা করার জন্য তাদের বাড়ি থেকে বা নিজ ঘর থেকে বাহির হইবে।  তো এবার আসুন কারা ধর্মীয় শিক্ষা বা দ্বীনি এলেম অর্জন করে এই সম্পর্কে আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাঃ কি বলেছেন সেটা জেনে নেই। শরহু মুশকিলুল আছারে ৩ হাজার আটশত ৮৪ নাম্বার হাদিসে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দ্বীনী ইলম অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করবে প্রত্যেক যুগের আস্থাভাজন ব্যক্তিবর্গরা, এরপর রাসুল সঃ বলেন ওই সমস্ত ব্যক্তি আলেম হওয়ার পর সমাজের সীমালংঘনকারীরা অর্থাৎ যারা ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে কুরআন-হাদিসের মধ্যে অপব্যাখ্যা ঢুকানোর চেষ্টা করে সেই সমস্ত বাতিলদের থেকে এলেমকে হেফাজত করবে।  ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে কেবলমাত্র সমাজের আস্থাভাজন বা সম্মানিত ব্যক্তিরা এটা বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাঃ আরো চৌদ্দশ বছর আগে বলে দিয়েছেন, আর তিনি এমন একজন নবী তিনি মিথ্যা কথা বলবে এরকম আশঙ্কা তো করাই যায় না বরং তিনি যেই সমস্ত কথা বলেন ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ পাক জানিয়ে দেওয়ার পরই মানুষদেরকে জানিয়ে দিতেন, সুতরাং আমরা আল্লাহর নবীর হাদিস থেকেও জানতে পারলাম যে ধর্মীয় শিক্ষা কেবলমাত্র অর্জন করে সমাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গরা, এবং তারা এলেম শিক্ষা করার পর সীমালংঘনকারীদের থেকে সেই সমস্ত আলেমকে হেফাজত করবে বা সংরক্ষণ করে রাখবে অর্থাৎ কোরআন ও হাদিসের মধ্যে কোন রকমের অপব্যাখ্যার জায়গা তারা দিবে না।  ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত  ধর্মীয় শিক্ষা অর্থাৎ দ্বীনী ইলম শিক্ষা করার অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসের মাধ্যমে বর্ণনা করে দিয়েছেন এবং পীর গাউস কুতুব আল্লাহর অলিগন দেখিয়ে দিয়েছেন এবং মানুষদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত কত বেশি। যাইহোক ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না, তবে এর মধ্যে হতে আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত নিয়ে রাসুল সাঃ এর কিছু হাদিসের অর্থ নিচে উল্লেখ করা হলো।  ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত: আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাঃ বলেন যে ব্যক্তি ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার জন্য অর্থাৎ ধর্মীয় এলেম শিক্ষা করার জন্য নিজের ঘর থেকে বাহির হইল ওই ব্যক্তির পায়ের নিচে ফেরেশতারা তাদের নুরের পর গুলো বিছিয়ে দেয়। অপর হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি এলেম অন্বেষণ করার জন্য নিজের ঘর থেকে বাহির হইল ওই ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্য গর্তের পিপীলিকা সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে, সুবহানাল্লাহ। অন্য আরেক জায়গায় আল্লাহর নবী বলেছেন উলামায়ে কেরাম অর্থাৎ যারা দ্বীনি এলেম শিক্ষা করে তারা হলো নবীগণের ওয়ারিশ। নবীগণ স্বর্ণরুপা টাকা-পয়সার উত্তরসূরী কাউকে বানায় না বরং সমস্ত নবীগণ উলামায়ে কেরামদেরকে তাদের এলেমের উত্তর সূরি বানিয়েছেন।  রাসুল সাঃ বলেন যদি কোন ঘরের মধ্যে কয়েকজন মানুষ একত্রিত হয় কুরআন তেলাওয়াত করার জন্য বা শিক্ষা করার জন্য তখন আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন ওই মজলিসের উপর সখিনা নাজিল করতে থাকেন। ওই মজলিসটাকে আল্লাহপাক রব্বুল আলামীন তাঁর রহমত দ্বারা গিরে ফেলেন, এবং আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে ওই মজলিসটাকে আল্লাহপাক রব্বুল আলামীনের ফেরেশতাগণ সম্পূর্ণরূপে বেষ্টন করে রাখে বলুন সুবাহানাল্লাহ, আল্লাহ পবিত্র।  আরো মাসালা শুনে রাখুন কোন একজন আলেম যদি একটি মাসালা নিয়ে অল্প সময় গবেষণা করে ওই গবেষণার কারণে ওই আলেমের আমলনামায় ওই পরিমাণ নেকি দেওয়া হবে যে পরিমাণ নেকি কোন একজন আবেদ অর্থাৎ সাধারণ মানুষ সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ে কামিয়েছে। অর্থাৎ সারারাত তাহাজ্জুদ পড়লে যেসব হয় সেই সওয়াব একজন আলেমের আমলনামায় দেওয়া হবে শুধুমাত্র একটি মাসালা নিয়ে অল্প সময় গবেষণা করার কারণে। শুধুমাত্র ফরজ এবং সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করে এরকম একজন আলেম ১০০০ সাধারণ আবেদ থেকে উত্তম।  এছাড়াও আরো অনেক অসংখ্য অগণিত ফজিলত বর্ণিত রয়েছে যা আমি আপনাদের সাথে যদি লিপিবদ্ধ করতে যাই বা উল্লেখ করতে যাই তাহলে হয়তো আজকের আর্টিকেলটা আরো অনেক বড় হয়ে যাবে তাই আজকে এই পর্যন্তই লিখলাম।  অন্য পোস্ট: মহিলা মাদ্রাসার বৈশিষ্ট্য বাদ মাগরিব তাবলীগের বয়ান  কেন আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন  উপরের আলোচনাগুলো যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ধর্মীয় শিক্ষা লাভের ব্যাপারে অর্থাৎ ফজিলতের ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। তারপর এ সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করার পরেও আপনার মনে আরও একটি প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমার সন্তানকে আমি কেন ধর্মীয় শিক্ষা দিব?? তাহলে চলুন এবার জেনে নেই কেন আপনি আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা বা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।  প্রথমত আপনি সারা জীবন যুবক থাকবেন না আপনি একদিন বৃদ্ধ হবেন আপনার বিবি একদিন বৃদ্ধা হবে তখন আপনাকে এবং আপনার বিবিকে লালন পালন করার জন্য অবশ্যই আপনার সন্তান এবং আপনার সন্তানের বউয়ের সাহায্য নিতে হবে। এখন বৃদ্ধ বয়সে প্রায় এরকম অনেক ঘটনাই দেখা দেয় যে সন্তান এবং সন্তানের বিবি বৃদ্ধ মা বাবার সেবা-যত্ন করে না, তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে, অন্ততপক্ষে এই কারণে হলেও আপনি আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। আপনি যদি আপনার সন্তানকে সঠিকভাবে ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা লাভ করাতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার সন্তান বৃদ্ধাকারে আপনাকে সেবা-যত্ন করবে।  আরো একটি কথা হচ্ছে মানুষ মৃত্যুর পর তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায় অর্থাৎ তার কবরের মধ্যে আর কোন আমল যায় না তার আমলনামা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি আমল কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলেও তার আমলনামায় যোগ হতে থাকে। এই তিনটে আমলের একটি হচ্ছে নেক সন্তান, অর্থাৎ আপনি যদি একটি নেক সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন আর সেই সন্তান যদি মানুষকে এলেম শিক্ষা দেয় মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করে তাহলে সেই সবটুকু আপনি কবর থেকেও পাবেন, তাই অন্তত কবরে শুয়ে থেকে সব পাওয়ার জন্য হলেও আপনার সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করুন।  মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার কোন দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। তবে আমরা শুনেছি যে মাতা পিতার জন্য সন্তানের দোয়া এবং সন্তানের জন্য মাতা পিতার দোয়া বন্দুকের গুলির নেয় কবুল হয়ে যায়। আপনি যখন মৃত্যুবরণ করবেন তখন অবশ্যই আপনার সন্তান আপনার কবরের পাশে গিয়ে দোয়া করবে আর যে দোয়াটা হতে পারে আপনার নাজাতের উসিলা হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনি যদি কোন আজাবের ফেরেস্তার হাতে গ্রেফতার হয়ে থাকেন বা হয়ে যান সে ক্ষেত্রে আপনার সন্তানের দোয়াটা আপনার জন্য মুক্তির উছিলা হবে। অন্ততপক্ষে কবরের আজাব থেকে বাঁচার জন্য হলেও আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করুন।  সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা না দিলে যা হয়  আমি এখন কথাটি বলবো অর্থাৎ সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা না দিলে মানুষের কি পরিণত হতে পারে সেটার বাস্তব একটা চিত্র আপনাদের সাথে তুলে ধরব, এবং এটা ঘটেছে আমি যে মাদ্রাসায় পড়ি সেই মাদ্রাসাতেই।  একটা বৃদ্ধা লোক মাদ্রাসায় এসে আমাদের মাদ্রাসার মুহতামিম সাহেবের কাছে বসে সজোরে কান্না করতে লাগলো। মুহতামিম সাহেব ওই ব্যক্তিটিকে তার কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন হুজুর আমার সন্তানের দ্বারা আমি মাজলুম আমি আমার সন্তানের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছি। আমার সন্তান আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়, প্রতিদিনই আমাকে ও আমার বিবি অর্থাৎ সন্তানের মাকে আমার সন্তান হেনস্থা করে। তাই হুজুর আমি মাদ্রাসায় এসেছি খতম পড়ানোর জন্য অর্থাৎ আমি এমন সন্তান চাই না আল্লাহ যেন আমার সন্তানকে দুনিয়া থেকে তুলে নেয়।  যে সন্তানকে মাতা পিতা এত কষ্ট করে মানুষ করে তিলে তিলে বড় করে সেই সন্তান যদি মাতা পিতাকে টর্চারিং করে হেনস্থা করে তাহলে বিষয়টা আপনার কাছে কেমন লাগে?? অন্ততপক্ষে আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি এতটুকু তো জানতে পারলেন যে, আপনার সন্তানকে যদি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত না করেন তাহলে অবশ্যই এরকম পরিস্থিতিতে পড়া সম্ভাবনা রয়েছে বা পড়তেও পারেন। আর অন্ততপক্ষে এই জন্য হলেও আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করুন বা সুন্দর আচার ব্যবহার শিষ্টাচার শিক্ষা দিন।  ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর  প্রশ্ন: ধর্মীয় শিক্ষা কারা অর্জন করে? উত্তর: সমাজের আস্তাবাজান ব্যক্তিরাই কেবল ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে।  প্রশ্ন: জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস উত্তর: রাসুল সাঃ বলেন ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক নর-নারীর উপর ফরজ করা হয়েছে।  প্রশ্ন: জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস আরবি উত্তর: طلب العلم فريضة على كل مسلم ومسلمه  অন্য পোস্ট: কষ্টের পুতুলের পিক হরিণের মাংস কত টাকা কেজি  শেষ কথা: ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত  আজকের এই আর্টিকেলে আমি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ফজিলত পাশাপাশি কেন আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন ইত্যাদি আনুষাঙ্গিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি আমার আজকের এই ইসলামিক আর্টিকেলটি একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে আমি আশাবাদী যে আপনি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন।  এবং আমি এটাও আশা করতেছি যে অবশ্যই আপনি আপনার সন্তান বা ভাই ভাতিজাকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন, তবে যদি কোন কারণবশত আপনার স্নেহের ছোটদেরকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারেন তাহলে অন্ততপক্ষে সঠিকভাবে কুরআন পড়ার যোগ্যতাটা শিক্ষা দিন এবং আদব আখলাক শিষ্টাচার শিক্ষা দিন, তাহলেই একমাত্র সন্তানের জীবনের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে অন্য তাই ভবিষ্যৎ অন্ধকার।  পোস্ট ট্যাগ: ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত, ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব, ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত, ধর্মীয় শিক্ষা কারা অর্জন করে?, জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস, জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস আরবি, কেন আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন, সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা না দিলে যা হয়।

ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত

ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে অনেক মানুষের এই প্রশ্ন উঠে তাই আজকে আমি ভাবলাম যে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কিছু লিখা যাক। ‌ হয়তোবা আমার আজকের এই আর্টিকেলটি যদি কোন ব্যক্তি পড়ার কারণে সে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি ধাবিত হয় বা ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে পারে তাহলে অবশ্যই এটা আমার জন্য উপকারী।


তাছাড়া ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কে মানুষদেরকে জানানো এবং অবগত করা আমাদের দায়িত্ব, তাই আজকে আমি আপনাকে অনুরোধ করব আপনি যেহেতু আমার আর্টিকেলটিকে ভিজিট করেই ফেলেছেন তাহলে অনুগ্রহ করে শেষ পর্যন্ত পড়বেন, আশা করি আপনার সময়টুকু নষ্ট হবে না।

ধর্মীয় শিক্ষা কাকে বলে?

আমাদের সমাজে বর্তমানে এরকম একটা অবস্থা হয়েছে যে মানুষেরা মনে করে যে, ধর্মীয় শিক্ষা কেবলমাত্র হুজুরদের জন্যই আর অন্যান্য মানুষের ধর্মীয় শিক্ষার কোন প্রয়োজনই নেই। কথাটা বাস্তবে ঠিক এরকমই কারণ আমরা যে সমাজে বসবাস করি সে সমাজের বাস্তব চিত্রই আমি বলতেছি, অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষাটাকে মানুষেরা গুরুত্বই দেয় না। ধর্মীয় শিক্ষা বলতে আমরা কি বুঝি, বা ধর্মীয় শিক্ষা কাকে বলে?? ধর্মীয় শিক্ষা হচ্ছে দ্বীনি এলম বা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া, আর দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া টাকে ধর্মীয় শিক্ষা বলা হয়।

ধর্মীয় শিক্ষা কারা অর্জন করে?

আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি নিজেই তার পবিত্র কোরআনের মধ্যে বলতেছেন, আর পবিত্র কোরআন এটি হচ্ছে এরকম একটা কিতাব যা দুনিয়ার মধ্যে যত কিতাব নাযিল করা হয়েছে বা যত ধরনের কিতাব রয়েছে সমস্ত কিতাবের মধ্য হইতে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব হচ্ছে আল কুরআন এর চাইতে সম্মানিত আর কোন কিতাব এই পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়নি আর হবেও না।

সেই কোরআনে পাকের সূরা তওবার ১২২ নম্বর আয়াত ১১ নম্বর পৃষ্ঠার ৫ নাম্বার পৃষ্ঠার শেষের দিকে আল্লাহ তা'আলা বলেন, মুমিনদের জন্য উচিত নয় তারা সকলেই কোন একটা গ্রাম থেকে একসাথে কোন একটি অভিযানে বাহির হয়ে যাওয়া, পরবর্তীতে আল্লাহ পাক আবার বলতেছেন কেন একটা গোত্রের মধ্যে থেকে মুমিনরা দ্বীন অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষা লাভের জন্য বাহির হয় না? যারা তাদের গোত্রের লোকদেরকে আল্লাহ পাকের পরিচয় আখেরাতের পরিচয় ইসলামের পরিচয় সম্পর্কে অবগত করবে ধর্মীয় শিক্ষা লাভের পরে বা দ্বীন শিক্ষা অন্বেষণ করে আসার পরে।

অর্থাৎ আল্লাহ পাকের এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন এটাই বুঝাতে চেয়েছেন তোমাদের মধ্যে একদল লোক দ্বীনী এলেম শিক্ষা করার জন্য বাহির হইবে এবং দ্বীন এলেম শিক্ষা করার পর তোমাদেরকে ওই ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে অবহিত করবে এবং জানাবে। আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের তৈরি করা জান্নাত জাহান্নাম কবর হাশর পুলসিরাত মিজান ইত্যাদি ও আরো বিভিন্ন মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে।

কেননা যারা ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে তারা কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে খুব ভালোভাবে গবেষণা করে এবং ইসলামের মাসলা-মাসায়েল সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করে যে সমস্ত মাসলা মাসায়েল তারা পরবর্তীতে তাদের গোত্রের মধ্যে গ্রামের মধ্যে এসে মানুষদেরকে শিক্ষা দিবে। এবং তাদেরকে আল্লাহ পাক প্রদত্ত এই সমস্ত এলেম বা এ সমস্ত বিষয় শিক্ষা দেওয়ার পর হয়তোবা একটি গোত্র মহল্লা বা জাতি সতর্ক হবে অর্থাৎ আল্লাহ পাকের দিকে ফিরে আসবে। এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে প্রত্যেক মহল্লা থেকে কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক সম্মানিত ব্যক্তিরাই দ্বীনী আলেম শিক্ষা করার জন্য তাদের বাড়ি থেকে বা নিজ ঘর থেকে বাহির হইবে।

তো এবার আসুন কারা ধর্মীয় শিক্ষা বা দ্বীনি এলেম অর্জন করে এই সম্পর্কে আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাঃ কি বলেছেন সেটা জেনে নেই। শরহু মুশকিলুল আছারে ৩ হাজার আটশত ৮৪ নাম্বার হাদিসে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দ্বীনী ইলম অর্থাৎ ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করবে প্রত্যেক যুগের আস্থাভাজন ব্যক্তিবর্গরা, এরপর রাসুল সঃ বলেন ওই সমস্ত ব্যক্তি আলেম হওয়ার পর সমাজের সীমালংঘনকারীরা অর্থাৎ যারা ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে কুরআন-হাদিসের মধ্যে অপব্যাখ্যা ঢুকানোর চেষ্টা করে সেই সমস্ত বাতিলদের থেকে এলেমকে হেফাজত করবে।

ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে কেবলমাত্র সমাজের আস্থাভাজন বা সম্মানিত ব্যক্তিরা এটা বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাঃ আরো চৌদ্দশ বছর আগে বলে দিয়েছেন, আর তিনি এমন একজন নবী তিনি মিথ্যা কথা বলবে এরকম আশঙ্কা তো করাই যায় না বরং তিনি যেই সমস্ত কথা বলেন ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ পাক জানিয়ে দেওয়ার পরই মানুষদেরকে জানিয়ে দিতেন, সুতরাং আমরা আল্লাহর নবীর হাদিস থেকেও জানতে পারলাম যে ধর্মীয় শিক্ষা কেবলমাত্র অর্জন করে সমাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গরা, এবং তারা এলেম শিক্ষা করার পর সীমালংঘনকারীদের থেকে সেই সমস্ত আলেমকে হেফাজত করবে বা সংরক্ষণ করে রাখবে অর্থাৎ কোরআন ও হাদিসের মধ্যে কোন রকমের অপব্যাখ্যার জায়গা তারা দিবে না।

 

ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত

ধর্মীয় শিক্ষা অর্থাৎ দ্বীনী ইলম শিক্ষা করার অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসের মাধ্যমে বর্ণনা করে দিয়েছেন এবং পীর গাউস কুতুব আল্লাহর অলিগন দেখিয়ে দিয়েছেন এবং মানুষদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত কত বেশি। যাইহোক ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না, তবে এর মধ্যে হতে আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত নিয়ে রাসুল সাঃ এর কিছু হাদিসের অর্থ নিচে উল্লেখ করা হলো।

ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত: আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাঃ বলেন যে ব্যক্তি ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার জন্য অর্থাৎ ধর্মীয় এলেম শিক্ষা করার জন্য নিজের ঘর থেকে বাহির হইল ওই ব্যক্তির পায়ের নিচে ফেরেশতারা তাদের নুরের পর গুলো বিছিয়ে দেয়। অপর হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেছেন যে ব্যক্তি এলেম অন্বেষণ করার জন্য নিজের ঘর থেকে বাহির হইল ওই ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্য গর্তের পিপীলিকা সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে, সুবহানাল্লাহ। অন্য আরেক জায়গায় আল্লাহর নবী বলেছেন উলামায়ে কেরাম অর্থাৎ যারা দ্বীনি এলেম শিক্ষা করে তারা হলো নবীগণের ওয়ারিশ। নবীগণ স্বর্ণরুপা টাকা-পয়সার উত্তরসূরী কাউকে বানায় না বরং সমস্ত নবীগণ উলামায়ে কেরামদেরকে তাদের এলেমের উত্তর সূরি বানিয়েছেন।

রাসুল সাঃ বলেন যদি কোন ঘরের মধ্যে কয়েকজন মানুষ একত্রিত হয় কুরআন তেলাওয়াত করার জন্য বা শিক্ষা করার জন্য তখন আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন ওই মজলিসের উপর সখিনা নাজিল করতে থাকেন। ওই মজলিসটাকে আল্লাহপাক রব্বুল আলামীন তাঁর রহমত দ্বারা গিরে ফেলেন, এবং আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে ওই মজলিসটাকে আল্লাহপাক রব্বুল আলামীনের ফেরেশতাগণ সম্পূর্ণরূপে বেষ্টন করে রাখে বলুন সুবাহানাল্লাহ, আল্লাহ পবিত্র।

আরো মাসালা শুনে রাখুন কোন একজন আলেম যদি একটি মাসালা নিয়ে অল্প সময় গবেষণা করে ওই গবেষণার কারণে ওই আলেমের আমলনামায় ওই পরিমাণ নেকি দেওয়া হবে যে পরিমাণ নেকি কোন একজন আবেদ অর্থাৎ সাধারণ মানুষ সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ে কামিয়েছে। অর্থাৎ সারারাত তাহাজ্জুদ পড়লে যেসব হয় সেই সওয়াব একজন আলেমের আমলনামায় দেওয়া হবে শুধুমাত্র একটি মাসালা নিয়ে অল্প সময় গবেষণা করার কারণে। শুধুমাত্র ফরজ এবং সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করে এরকম একজন আলেম ১০০০ সাধারণ আবেদ থেকে উত্তম।

এছাড়াও আরো অনেক অসংখ্য অগণিত ফজিলত বর্ণিত রয়েছে যা আমি আপনাদের সাথে যদি লিপিবদ্ধ করতে যাই বা উল্লেখ করতে যাই তাহলে হয়তো আজকের আর্টিকেলটা আরো অনেক বড় হয়ে যাবে তাই আজকে এই পর্যন্তই লিখলাম।


কেন আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন

উপরের আলোচনাগুলো যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ধর্মীয় শিক্ষা লাভের ব্যাপারে অর্থাৎ ফজিলতের ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। তারপর এ সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করার পরেও আপনার মনে আরও একটি প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমার সন্তানকে আমি কেন ধর্মীয় শিক্ষা দিব?? তাহলে চলুন এবার জেনে নেই কেন আপনি আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা বা দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।

প্রথমত আপনি সারা জীবন যুবক থাকবেন না আপনি একদিন বৃদ্ধ হবেন আপনার বিবি একদিন বৃদ্ধা হবে তখন আপনাকে এবং আপনার বিবিকে লালন পালন করার জন্য অবশ্যই আপনার সন্তান এবং আপনার সন্তানের বউয়ের সাহায্য নিতে হবে। এখন বৃদ্ধ বয়সে প্রায় এরকম অনেক ঘটনাই দেখা দেয় যে সন্তান এবং সন্তানের বিবি বৃদ্ধ মা বাবার সেবা-যত্ন করে না, তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে, অন্ততপক্ষে এই কারণে হলেও আপনি আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন। আপনি যদি আপনার সন্তানকে সঠিকভাবে ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা লাভ করাতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার সন্তান বৃদ্ধাকারে আপনাকে সেবা-যত্ন করবে।

আরো একটি কথা হচ্ছে মানুষ মৃত্যুর পর তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায় অর্থাৎ তার কবরের মধ্যে আর কোন আমল যায় না তার আমলনামা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি আমল কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলেও তার আমলনামায় যোগ হতে থাকে। এই তিনটে আমলের একটি হচ্ছে নেক সন্তান, অর্থাৎ আপনি যদি একটি নেক সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন আর সেই সন্তান যদি মানুষকে এলেম শিক্ষা দেয় মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করে তাহলে সেই সবটুকু আপনি কবর থেকেও পাবেন, তাই অন্তত কবরে শুয়ে থেকে সব পাওয়ার জন্য হলেও আপনার সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করুন।

মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার কোন দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। তবে আমরা শুনেছি যে মাতা পিতার জন্য সন্তানের দোয়া এবং সন্তানের জন্য মাতা পিতার দোয়া বন্দুকের গুলির নেয় কবুল হয়ে যায়। আপনি যখন মৃত্যুবরণ করবেন তখন অবশ্যই আপনার সন্তান আপনার কবরের পাশে গিয়ে দোয়া করবে আর যে দোয়াটা হতে পারে আপনার নাজাতের উসিলা হয়ে যাবে অর্থাৎ আপনি যদি কোন আজাবের ফেরেস্তার হাতে গ্রেফতার হয়ে থাকেন বা হয়ে যান সে ক্ষেত্রে আপনার সন্তানের দোয়াটা আপনার জন্য মুক্তির উছিলা হবে। অন্ততপক্ষে কবরের আজাব থেকে বাঁচার জন্য হলেও আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করুন।

সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা না দিলে যা হয়

আমি এখন কথাটি বলবো অর্থাৎ সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা না দিলে মানুষের কি পরিণত হতে পারে সেটার বাস্তব একটা চিত্র আপনাদের সাথে তুলে ধরব, এবং এটা ঘটেছে আমি যে মাদ্রাসায় পড়ি সেই মাদ্রাসাতেই।

একটা বৃদ্ধা লোক মাদ্রাসায় এসে আমাদের মাদ্রাসার মুহতামিম সাহেবের কাছে বসে সজোরে কান্না করতে লাগলো। মুহতামিম সাহেব ওই ব্যক্তিটিকে তার কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন হুজুর আমার সন্তানের দ্বারা আমি মাজলুম আমি আমার সন্তানের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছি। আমার সন্তান আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়, প্রতিদিনই আমাকে ও আমার বিবি অর্থাৎ সন্তানের মাকে আমার সন্তান হেনস্থা করে। তাই হুজুর আমি মাদ্রাসায় এসেছি খতম পড়ানোর জন্য অর্থাৎ আমি এমন সন্তান চাই না আল্লাহ যেন আমার সন্তানকে দুনিয়া থেকে তুলে নেয়।

যে সন্তানকে মাতা পিতা এত কষ্ট করে মানুষ করে তিলে তিলে বড় করে সেই সন্তান যদি মাতা পিতাকে টর্চারিং করে হেনস্থা করে তাহলে বিষয়টা আপনার কাছে কেমন লাগে?? অন্ততপক্ষে আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি এতটুকু তো জানতে পারলেন যে, আপনার সন্তানকে যদি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত না করেন তাহলে অবশ্যই এরকম পরিস্থিতিতে পড়া সম্ভাবনা রয়েছে বা পড়তেও পারেন। আর অন্ততপক্ষে এই জন্য হলেও আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করুন বা সুন্দর আচার ব্যবহার শিষ্টাচার শিক্ষা দিন।

ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: ধর্মীয় শিক্ষা কারা অর্জন করে?

উত্তর: সমাজের আস্তাবাজান ব্যক্তিরাই কেবল ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে।

প্রশ্ন: জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস

উত্তর: রাসুল সাঃ বলেন ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক নর-নারীর উপর ফরজ করা হয়েছে।

প্রশ্ন: জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস আরবি

উত্তর: طلب العلم فريضة على كل مسلم ومسلمه


শেষ কথা: ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত

আজকের এই আর্টিকেলে আমি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ফজিলত পাশাপাশি কেন আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন ইত্যাদি আনুষাঙ্গিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি আমার আজকের এই ইসলামিক আর্টিকেলটি একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে আমি আশাবাদী যে আপনি ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন।

এবং আমি এটাও আশা করতেছি যে অবশ্যই আপনি আপনার সন্তান বা ভাই ভাতিজাকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন, তবে যদি কোন কারণবশত আপনার স্নেহের ছোটদেরকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারেন তাহলে অন্ততপক্ষে সঠিকভাবে কুরআন পড়ার যোগ্যতাটা শিক্ষা দিন এবং আদব আখলাক শিষ্টাচার শিক্ষা দিন, তাহলেই একমাত্র সন্তানের জীবনের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে অন্য তাই ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

পোস্ট ট্যাগ: ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত, ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব, ধর্মীয় শিক্ষার ফজিলত, ধর্মীয় শিক্ষা কারা অর্জন করে?, জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস, জ্ঞান অর্জন করা ফরজ হাদিস আরবি, কেন আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দিবেন, সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা না দিলে যা হয়।

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال