আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই? আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
আজকের আমি চলে আসলাম সকালে ঘুমালে কি কি ক্ষতি হয় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে।
আমরা সকলেই কমবেশি সকালে ঘুমাতে পছন্দ করি বা ঘুমাই।
এতে আসলে আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। আমরা আসলে জানিনা,
আমরা নিজেরাই নিজেদের কত ক্ষতি করছি।
এই বিষয়ে আল্লাহ কি বলেছেন তা জানতে আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়তে থাকুন।
সকালে ঘুমালে কি কি ক্ষতি হয়?
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দিন এবং রাতের ২৪ ঘন্টার মধ্যে একটি বিশেষ সময়ের গুরুত্ব এবং মর্যাদা
বিশেষভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
ফজরের আগে এবং ফজরের পরের যে সময়টা বিশেষ করে সূর্য ওঠার আরো পর পর্যন্ত
চাশতের সালাতের পর পর্যন্ত। এই পুরো সময়টা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কুরআনুল কারীমে আল্লাহতালা অনেক সময়ের নামে এবং অনেক বস্তুর নামে শপথ করেছেন।
আমরা মূলত শপথ করি একটা কথার গুরুত্ব বা সত্যতা প্রমাণ করার জন্য।
কেউ যদি বিশ্বাস না করে এই জন্য আমরা শপথ করে বলি।
আল্লাহরাব্বুল আলামিন অনেক কথা শপথ করে বলেছেন যেন আমরা বুঝতে পারি
এই কথার অনেক গুরুত্ব। আল্লাহতালা গুরুত্বপূর্ণ বুঝানোর জন্য শপথ করেছেন।
নাইলে তার শপথের দরকার ছিল না। ওই কথাটা এত গুরুত্বপূর্ণ, আল্লাহতালা যে বস্তুর নামে
বা তার যে সৃষ্টির নামে শপথ করেন সেই বস্তুটির বিশেষ মর্যাদা তার কাছে আছে এটি প্রমাণিত হয়,
সেই বস্তুটির নামে শপথ করার মাধ্যমে।
কারণ আল্লাহ তাআলা ঐ বস্তুর নামের শপথ করা মানেই হলো সেই বস্তুর বড়ত্ব।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রমাণ করতে চেয়েছে এটার বিশেষ গুরুত্ব আছে।
তার নাম ধরে আল্লাহ তায়ালা শপথ করছে কিন্তু আমাদের জন্য আল্লাহ ছাড়া আর কারোর বা
কোন বস্তুর নামের শপথ করা জায়েজ নাই।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি শপথ করতে চায় যে ব্যক্তি কসম করতে চায়
সে আল্লাহর নামে কসম করবে আর না হলে চুপ থাকবে।
আল্লাহ ছাড়া আর কারো বা অন্য কিছুর নামে শপথ করবে না।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনুল কারিমের বেশ কয়েকটি জায়গায় সকালে সময়টার নামে শপথ
করেছেন অনেক জায়গায়। আপনি অবাক হবেন কোরানুল কারীমের এক দুই জায়গা নাই
অনেক জায়গায় একটি সৃষ্টির নামে শপথ করেছেন।
অন্য কোন বিষয়ে সচরাচর পাওয়া যায় না যে পুরা কোরআনের মধ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন
এই একটি বিষয় নামে শপথ করেছেন।
কিন্তু সকালবেলা, যে সময়টা ভোরবেলা, এই সকালের সময়টা এত গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহর কাছে
যে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রকম শপথ করেছেন।
এই সময়টার নাম ধরে শপথ করেছেন তার মানে এই টাইমটার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে আছে।
যে সকাল বিকশিত হয় আস্তে আস্তে আলোকিত হতে হতে দিনের দিকে চলে যায়, সেই সকালের শপথ,
দিনের প্রথম অংশের শপথ।
আল্লাহতালা বলেছেন ফজরের শপথ, ভোরের শপথ, অন্য জায়গায় আল্লাহ বলেছেন
তোমরা তাসবি বর্ণনা করো, পবিত্রতা বর্ণনা কর, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের,
সকালে এবং সন্ধ্যায়, সকলের বর্ণনা করা আল্লাহ নির্দেশ করেছেন।
অন্য জায়গায় আল্লাহ বলেছেন তোমার রবের প্রশংসা মাখা তাসবিহ বর্ণনা করো সন্ধ্যা এবং সকালে।
সকাল এবং সন্ধ্যা, দিনের শুরুএবং রাতের শুরু, এই সময়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই সময়ের ভিতরে
বিশেষ গুরুত্ব হল সকালের সময়টা।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করেছেন,
”আল্লাহ আমার উম্মতকে সকালের এই সময়টাতে বরকত দান করেন”
নবী সাঃ নিজে দোয়া করেছেন আমাদের জন্য এই সকালের সময়ের। একজন ঈমানদারের কাছে
দিন এবং রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিশেষ তাৎপর্য এবং গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো সকালের সময় টা।
এই জন্য এই সকালের সময়টাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে অনেকগুলো কর্মসূচি দিয়েছেন।
অনেকগুলো ডিউটি ইসলামে দেওয়া আছে। তার ভিতরে সবচেয়ে বড় ডিউটি হলো সকালের নামাজ
জামাতের সাথে পুরুষরা আর মহিলারা বাসায় ওয়াক্ত মত সুন্দর করে আদায় করা।
সকালের এই আমলটা আমাদের বেশিরভাগ মুসলমানদের জন্য করাটা কঠিন হয়ে যায়।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যারা এই আলো আঁধারে ফজরের সালাত আদায় করতে
মসজিদে যাবে, আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের ময়দানে ভয়ংকার অন্ধকারের সাজা থেকে মুক্তি দিবেন।
তারা আলো পাবে সেদিন, তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে রাখবেন না।
সকালের এই সময়টা আল্লাহতালার কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ।
সেজন্যই সময়ের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি হলো ফজরের সালাত আদায়।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু সালাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে সালাত আদায় করতে
মসজিদে যায়, ওই ব্যক্তির জন্য আল্লাহতালা পুরো দিনটা বরকতময় করে দেয়।
এই দিনটা তার হাসিখুশিতে যায়, বরকত তার জীবনে সে লাভ করে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি সালাত আদায় না করে সাতটা আটটায়
ঘুম থেকে উঠে তারা অলস। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সকলের সময়টাতে অনেক বারাকা দান করেন।
আল্লাহর খাতায় অনেক উপরের ক্লাসের মুসলমান, যারা অনেক উঁচু উন্নত মানের মুসলমান এবং
জান্নাতে যাদের স্থান অনেক উপরে, সমাজের এরকম পিওর এবং খাঁটি নির্ভেজাল
মুসল্লী যদি দেখতে চান। তাইলে দেখবেন মসজিদে ফজরের জামাতে কারা উপস্থিত হয়।
অন্য অনেক নামাজ অনেকে পড়তে পারে কিন্তু ফজরের নামাজ সবাই পড়তে পারে না।
ফজরের নামাজ পড়তে হলে আপনাকে একটা কাজ করতে হবে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সকালের এই সময় এত গুরুত্ব দিতেন, ফজরের সালাতের পরে
নিজ জায়গায় বসে জিকির করার জন্য উৎসাহ দিতেন, সকাল এবং সন্ধ্যার অনেকগুলো তাজবী
আছে কুরআনে। আল্লাহতালা বলেছেন তাসবিহ পেশ করার জন্য, জিকির করার জন্য,
আল্লাহ স্মরণ করার জন্য। এবং ফজরের নামাজ পড়ে এশরাকের সময় হওয়ার আগ পর্যন্ত
কেউ যদি তাসবীহ পাঠ করে, এবং দুই রাকাত এশরাকের নামাজ যদি সে আদায় করে,
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ হজের সওয়াব দান করেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর
এই বিশাল বড় নেয়ামত এবং পুরস্কার লাভের জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম
এবং তার সাহাবীরা বসে বসে জিকির আজগা করতেন।
এরপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সাধারণত সাহাবীদের সাথে কথা বলতেন।
দরকারি আলোচনা সারতেন ঘুমাতেন না। আর আমরা বেশিরভাগ মানুষ ফজরের নামাজ না পড়ে
৯ টা:১০ টা পর্যন্ত ঘুমাই। যে সময়টাতে নবী করিম সাঃ বরকতের দোয়া করেছেন।
সেই সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম দোয়া করেছেন
”আল্লাহ আমার উম্মতকে সকলের সময়টাতে বরকত দিয়েন”
যে সময়টাতে আল্লাহর নবী দোয়া করেছেন, সেই সময়টাতে ব্যবসা করলে, কৃষি কাজ করলে,
পড়ালেখা করলে, সেখানে বরকত হবে। আমল করলে, জিকির আজগার করলে, তেলাওয়াত করলে,
সেখানে বরকত হবে।
সকালের এই সময়টাতে যাই করবেন তাতেই বরকত হবে।
কারণ এই সময়টাতে বরকতের দোয়া করেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
আমাদের অনেকের জীবনে বরকত নাই।
কারণ হল সকালের সময়টাতে অলস ঘুমে কাটাই। সকালের এই বরকতের সময়টাতেই যদি ঘুমিয়ে
কাটিয়ে দেই তাহলে আমাদের জীবনে বারাকা কোথা থেকে আসবে?
এজন্য আমাদের জীবনটা কে পাল্টাতে হবে। সকালে সময়টাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
তাহলে আমাদের জীবন বরকতময় জীবন হবে ইনশাল্লাহ।
শেষ কথাঃ
আমরা এই আর্টিকেলে ইসলামে আলকে সকালের এই সময়টার কত গুরুত্ব তা জানতে পারলাম।
আশা করি আমরা সকলেই সকলের এই সময়টার গুরুত্ব দেব।
এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে আমার এই ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকুন।