আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন,
আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে
শেয়ার করব হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনী নিয়ে কিছু কথা ।
হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনী সম্পর্কে জানতে এবং আপনার ছোট্ট সোনামণিকে
হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনী সম্পর্কে জানাতে আমার আজকের আর্টিকেলটি
পড়তে থাকুন।
হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনী রচনা
হযরত আবু বকর ইবনেকোহাফা, শীতের মৌসুম অনেকদিন হলো শেষ হয়েছে।
সূর্যের নির্দয় তাপ এখনই এত গরম যে, মরুভূমির বালুর ওপর পা রাখা যায় না।
চারিদিকে মরুপ্রান্তর। মাঝে মাঝে দু'চারটা
খেজুর গাছ এবং কতকগুলো বাড়ি। এসব বাড়ি মক্কার সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশীয়দের।
সামনেই দেখা যাচ্ছে কাবার প্রাচীন ঘর। ঘরটি পুরোতন হয়ে গেছে।
মেরামত করা খুব জরুরি। ঘরের মধ্যে আরবের সব দেব-দেবীর মূর্তি।
কোনোটা পাথরের, কোনোটা মাটির আর কোনোটা কাঠের। সব মিলিয়ে তিনশো ষাটটি ।
এর মধ্যে চারটা মূর্তি প্রধান। এগুলো হলো লাত, উজ্জা, হোবল আর মানাত।
আরবের সব পৌত্তলিকরাই এদেরকে তাদের উপাস্য বলে মানে।
সূর্য প্রায় মাথার ওপর উঠে এসেছে। এমন সময় দেখা গেল একজন বয়স্ক কুরাইশ-নেতা
একটি কিশোরকে নিয়ে ওই গরম বালুর পথ ধরে কাবার দিকে হেঁটে আসছেন।
তখনকার প্রচলিত প্রথা অনুসারে দেবতাদের কাছে আসতে হলে ছেলে-বুড়ো,
পুরুষ-মহিলা — নির্বিশেষে সকলকেই উলঙ্গ হয়ে আসতে হতো।
সে কারণে এই দু'জনের পরনেও কোনো কাপড়ের বালাই নেই।
অবশেষে কাবাঘরের সামনে এসে উভয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। বয়স্ক কুরাইশ-নেতার নাম
আবু কোহাফা। সঙ্গের কিশোরটি তার ছেলে। ছেলেটি এই প্রথম কাবাঘরের দেবতাদের কাছে
এসেছে। তাদেরকে তার মনের কথা জানাতে। তাই আবু কোহাফা তাকে ঘরের সামনে
একা রেখে নিজে কিছু দূরে বসে থাকা অন্যান্য কুরাইশ-নেতাদের কাছে চলে গেলেন ।
কিশোরটি ভেতরে গিয়ে মূর্তিগুলোর সামনে দাঁড়াল। সকাল থেকে এ পর্যন্ত সে কিছু খায়নি।
তাই সবচেয়ে বড় মূর্তিটির সামনে দাঁড়িয়ে বলল, আমার খুব খিদে পেয়েছে।
তুমি আমাকে খেতে দাও। কিন্তু পাথরের মূর্তি কথার কোনো উত্তর দিল না।
কেমন করেই-বা দেবে? পাথরের বানানো মূর্তি কি কথা বলতে পারে? কিছুক্ষণ প্রতীক্ষা করে
কোনো উত্তর না পেয়ে কিশোরটি আবার বলল, আমি উলঙ্গ হয়ে থাকতে পারি না,
আমার পরার জন্য কাপড় দাও; কিন্তু এবারও মূর্তির পক্ষ থেকে না এল কোনো উত্তর,
আর না এল পরার জন্য কোনো কাপড়। ক্ষুব্ধ কিশোরের রাগ হয়ে গেল।
সে তো এক নেতার ছেলে । সেও তো ছোট ছোট ছেলেদের নেতা।
তাই সে হাতের কাছে পাওয়া একটা পাথর তুলে মূর্তিটার মুখে ছুঁড়ে মারল।
ঠাস করে পাথরটি বড় মূর্তিটার মুখে লেগে একদিকে ছিটকে পড়ল।
অবাক হয়ে কিশোরটি দেখল, মূর্তিটি তাকে যেমন খাবার দিল না, পোশাক দিল না,
তেমনি পাথরের আঘাত খেয়েও তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন হলো না। তাকে মারার বা ধরার
চেষ্টাও করল না। একইভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল । তারপাশের অন্য মূর্তিগুলোও একইভাবে
চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল। এতে কিশোরটির মনে এই বিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে গেল যে,
এই দেবতাগুলো যেমন কিছু চাইলে দিতেও পারে না, তেমনি নিজেকে বাঁচাতেও পারে না।
সে আজ পর্যন্ত কোনো দিন এদেরকে প্রণাম করেনি, এদের কাছে কিছু চায়ওনি।
আজকের অভিজ্ঞতার পরে সে আর কখনো এদের দেবতা বলে স্বীকার করবে না
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ছেলেটি কাবাঘর থেকে বের হয়ে এল ।
আবু বকর রাঃ এর ঘটনা
তোমরা কি জানো, এই কিশোরের নাম কী? এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছ এই কিশোরের
নাম আবু বকর! তখন তাঁর বয়স কতই-বা ছিল! এই তোমাদেরই বয়সী।
কিন্তু আল্লাহর কী মেহেরবানি, তিনি তাঁর জীবনে কোনো দিনই এই কাবাঘরের
মানুষ-বানানো মূর্তির পূজা করেননি বা ওদের সামনে মাথা নতও করেননি।
আল্লাহ তাঁকে এভাবেই মূর্তিপূজার হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
এরপর তিনি আরও একটু বড় হলেন।
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাড়ি থেকে তাঁর বাড়ি বেশি দূরে ছিল না।
তা ছাড়া তাঁরা দু'জনেই সৎ ও বিশ্বাসভাজন হিসাবে ছিলেন সুপরিচিত।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে কিশোর বয়স থেকেই তাঁর
পরিচয় ও সম্পর্ক ছিল। এরপর তিনি যখন আঠারো বছর বয়সে পৌঁছুলেন,
তখন তাঁর পিতা ব্যবসার কাজে তাঁকে বিভিন্ন দেশে পাঠাতে শুরু করলেন।
এ সময়ের একটি ঘটনার কথা আজ তোমাদের কাছে বলছি। মন দিয়ে শোনো…
★ উপসংহার :
তো বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনী এর
প্রথম পর্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি, এবং আমি আশা করছি
হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনীর বাকি পর্বগুলো পড়তে
আমার ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকবেন।