হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনীর “ তৃতীয় পর্ব “

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই?  আশা করি ভাল আছেন, 
 আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। 
আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব হযরত আবু বকর রাঃ এর জীবনীর 
তৃতীয়  পর্ব নিয়ে কিছু কথা । হযরত আবু বকর রাঃ ইসলাম গ্রহণের পর এর 
জীবনী সম্পর্কে জানতে এবং আপনার ছোট্ট সোনামণিকে হযরত আবু বকর রাঃ
 ইসলাম গ্রহণের পর এর জীবনী সম্পর্কে জানাতে আমার আজকের 
আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। 
 

 
 
হযরত আবু বকর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণের পর

ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তিনি ‘আবদুল কাবা’ নামে সুপরিচিত ছিলেন। 

তাঁর পিতার নাম ছিল আবু কোহাফা এবং মায়ের নাম ছিল সালমা। 

তামীম গোত্রের এই মহিলা পরে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং উম্মুল খায়ের উপাধিতে ভূষিত হন।

আবদুল কাবা ইসলাম গ্রহণের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাম রাখেন 

আবদুল্লাহ। এ ছাড়াও সিদ্দীক (সত্যবাদী) এবং আতিক (মহানুভব)ও ছিল তাঁর আহরিত 

দু'টি উপাধি ।


অন্য পোস্ট

তবে তিনি আবু বকর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। নবুয়াতপ্রাপ্তির বর্ষে কুরআন শরীফে 

একটি আয়াত নাযিল হয়, যার পর থেকে প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াতি কাজ শুরু হয়। 

মূর্তিপূজক আরববাসী এক আল্লাহর দাওয়াত গ্রহণ করতে পারেনি। তারা তাদের দেবতার 

মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে যখন হারাম শরীফে আলোচনা করছিল, 

সে সময়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হারাম শরীফে উপস্থিত হন। 

এতে মূর্তিপূজক মুশরিকদের উত্তেজনা বেড়ে যায়। তাদের মধ্যে একজন মূর্তিপূজক 

সোজা এসে তাঁকে প্রশ্ন করে, আপনি কি আমাদের আরব্য দেবতাদের অপমান করছেন? 

নির্ভীক নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 'হ্যাঁ-বাচক' উত্তর দিলে উপস্থিত জনতা তখন 

তাঁর ওপর চড়াও হয় এবং জিজ্ঞেস করতে থাকে—আপনি বুঝি এইসব দেবতার পরিবর্তে 

একটিমাত্র দেবতা প্রতিষ্ঠিত করতে চান! প্রহারের ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান।


এ সময় কেউ হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুকে এ বিষয়ে সংবাদ দিলে তিনি দ্রুত 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং তাদেরকে বলেন, হায়! অনুকম্পা তোমাদের ওপর; 

একটি লোককে তোমরা মেরে ফেলতে চাচ্ছ শুধুমাত্র এটুকু বলার জন্য যে, 

আল্লাহ তাঁর পৃষ্ঠপোষক; অথচ তোমাদের স্রষ্টার নিকট থেকে তিনি নিদর্শনসমূহ 

বয়ে এনেছেন। মূর্তিপূজকরা তখন মুহাম্মাদের বদলে আবু বকরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। 

হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু তখন বলেন, সম্ভ্রম ও মহত্ত্বের মালিক, আপনি পবিত্র। 

এ কথা শুনে তারা আরও উত্তেজিত হয়ে তাঁকে বেদম প্রহার করতে থাকে। তাঁর মাথা 

ফেটে যায়।


এবং চেহারা-চোখ- মুখ-নাক-কান রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। তিনি বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। 

অবস্থা এমন সঙ্গিন হয়ে যায় যে, তিনি যে বাঁচতে পারেন, এ বিশ্বাস করাও কঠিন হয়ে যায়। 

এই নিদারুণ প্রহারের কথা বনী তাইমের লোকদের নিকট পৌঁছলে তারা তাড়াতাড়ি 

হারাম শরীফে এসে উপস্থিত হয় এবং তাঁকে উদ্ধার করে তাঁর নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। 

মা আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা বলেন, সে সময় তাঁর পিতাকে এত বেশি প্রহার করা হয় যে, 

শুধুমাত্র হাতের ছোঁয়া লাগলেই তাঁর মাথার চুল পর্যন্ত উঠে আসত! 

হযরত আবু বকর রাযি.-এর এই নিদারুণ মরণাপন্ন অবস্থা দেখে সকলের ধারণা হলো, 

তিনি আর বাঁচবেন না। বনী তাইম হারাম শরীফে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করল, 

এই দুর্ঘটনায় যদি আবু বকর মারা যান তবে আমরা তার প্রতিশোধে উতবা ইবনে রাবিআকে 

হত্যা করব ।


এই মারামারিতে উতবার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। 

সমস্ত দিন এইভাবে কেটে গেল। অবশেষে সন্ধ্যার পর তাঁর জ্ঞান ফিরে এল। 

হুঁশ ফেরার পর তাঁর প্রথম কথা ছিল—আমার প্রিয় নবী কেমন আছেন! 

উপস্থিত লোকজন বলতে লাগল, যার দরুন তোমার এই করুণ অবস্থা, 

সারাদিন পর মৃত্যুর মুখ থেকে যখন বাকশক্তি ফিরে পেল, তখন আবার সেই মুহাম্মাদের নাম!

এরপর তারা তাঁর মা উম্মুল খায়েরকে তাঁর জন্য কিছু খাদ্য প্রস্তুত করতে বলে 

যে যার বাড়িতে চলে গেল ।


উপসংহার : তো বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে 
 হযরত আবু বকর রাঃসন্ন্যাসী বুহায়রার সঙ্গ  এর জীবনী এর তৃতীয় পর্ব নিয়ে বিস্তারিত 
আলোচনা করার চেষ্টা করেছি, এবং আমি আশা করছি হযরত আবু বকর রাঃ এর 
জীবনীর বাকি পর্বগুলো পড়তে আমার ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকবেন।

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال