নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত এত বেশি যে নামাজ হল কালেমা শাহাদতের স্বীকৃতির পরেই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর নামাজ পড়তে যারা অলসতা করে তাদের মধ্যে কয়েকটি ভাগ রয়েছে, যেমন তাদের ভিতর কেউ এমন আছে যে সে কোন সময় নামাজ আদায় করে না, যারা নামাজে অলসতা করে তারা কুফরি করল।
আবার তাদের ভিতর এমনও মানুষ আছে যে, এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ে তো অন্য ওয়াক্ত ছেড়ে দেয়, এর আইনও প্রথম ভাগের মতো। তাদের মধ্যে আবার এমন কেউ আছে যারা মসজিদে গিয়ে জামা‘আতে নামাজ পড়তে অলসতা করে।কেউ তো আবার ফজর নামাজ মসজিদে গিয়ে জামা‘আতে সাথে পড়তে অলসতা করে, এগুলো হল অনেক বড় ধরণের সমস্যা এবং অবহেলা।এ জন্য আমি এ ছোট আকাই আর্টিকেলটি লিখার চেষ্টা করছি এবং আর্টিকেলটি সংক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন ইনশাল্লাহ ।কোরআনে আল্লাহ সব থেকে গুরুত্ব দিয়েছেন
নামাজের।নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি, আখেরাতে নাজাত পাওয়ার প্রথম বাঘ।আমরা অনেকেই মনে করি যে, এই বিধান শুধু নামাজ অস্বীকারকারীর জন্য। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল সঠিক নয়।
কেননা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ ছাড়া অন্য কোনো ইবাদত পরিত্যাগকারীকে কাফির হিসেবে সাব্যস্ত করেন নি। আর খালি নামাজ কেন? যে কোনো ইবাদত অস্বীকার করলেও ওই ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে। সুতরাং এজন্য কুরআন ও হাদীসের আলোকে নামাজ পরিত্যাগকারীই কাফির। আল্লাহ আমাদেরকে সবাইকে দীনের সঠিক বুঝ দান করে সঠিক আমল করার তাওফীক দিন।
নামাজ ছেড়ে দেওয়ার বিধান:
কালেমার সাক্ষ্য দেওয়ার পর নামাজ হচ্ছে ইসলামের অধিকতর গুরুত্ব ও তাগিদপূর্ণ রুকন বা ইসলামের সবচেয়ে বড় আনুষ্ঠানিকতা, প্রতীক ও উত্তম ইবাদত। এ জন্যেই আল্লাহ তা‘আলা সালাতকে ঈমান নামে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন তাঁর বাণী:
“আল্লাহ এরকম নন যে, তোমাদের ঈমান (নামাজ)-কে পুরা পুরী নষ্ট করে দিবেন।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৪৩]
পূর্বের শরী‘আতসমূহের মধ্য ও কোনো শরী‘আত নামাজবিহীন ছিল না। আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন,
“হে আমার আল্লাহ! আমাকে নামাজ প্রতিষ্ঠাকারী বানাও এবং আমার বংশধরদের মধ্যেও নামাজ প্রতিষ্ঠাকারী বানাও ।” [সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ৪০]
এবং ইসমাঈল আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন,
“সে তার পরিচিতদেরকে নামাজ ও যাকাতের আদেশ দিত এবং সে ছিল তার আল্লাহ উপর সন্তোষভাজন।” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৫]
যাবতীয় ফরয বিষয় জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এর মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ফরয হয়েছে, কিন্তু নামাজের জন্য তাঁকে আল্লাহর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে কথপোকথন করেন এবং তাঁর প্রতি ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করেন। এবং তা থেকে কমিয়ে ৫ ওয়াক্ত বাকী রাখা হয় যার নেকী ৫০ ওয়াক্তের সমান। আল্লাহরই সকল প্রশংসা ও অনুগ্রহ।
নামাজ ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তির ইহকালীন বিধান:
নামাজ আদায়কারী মুসলিম নারীর সাথে বেনামাযীর বিয়ে দেওয়া জায়েজ নাই। তার তার জবাইকৃত কোনপশুর মাংস খাওয়া ও জায়েজ নাই, এবং সেই বেনামাজি ব্যক্তি তার কোনো আত্মীয়ের সম্পত্তির অংশ পাবে না। একই ভাবে তার কোন আত্মীয়-স্বজন ও তার থেকে কোনো অংশের অধিকারী হবে না, ওই ব্যক্তি যখন মারা যাবে তখন তার জানাযা পড়ানো যাবে না,আল্লাহর কাছে তার ক্ষমা ও করুণার জন্য দো‘আ করা যাবে না, মুসলিমদের কবরস্থানে ওই বেনামাজি ব্যক্তিকে দাফন করা হবে না এবং সে দিনের ভাই হিসেবে গণ্য হবে না, এবং তার থেকে আত্মীয়তার চিহ্ন করা ওয়াজিব।
নামাজ মুসলিমের ইহকাল ও পরকালের কাজ কর্মে সহায়ক:
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“ হে বান্দা গণ তোমরা ধৈর্য ধারণ করো ও নামাজের মাধ্যমে আমার কাছে সাহায্য চাও ।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪৫]
এজন্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যখন কোন সমস্যায় পড়তেন তখন ভয় নামাজে বসে যেতেন নামাজী হল বান্দা এবং রবের মধ্যে সম্পর্ক !কোন মুসলিম যখন কোন কাজের জন্য চিন্তা করবে তখন অবশ্যই আল্লাহ শরণাপন্ন হবে যার হাতে রয়েছে সকল ক্ষমতা!
ফজর নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত:
ফজর নামাজের গুরুত্বও ফজিলত এত বেশি যে অন্যান্য সকল নামাজের তুলনায় ফজর নামাজের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব বেশি। মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “এশা ও ফজর নামাজে কী ফযীলত আছে মানুষ যদি তা জানত তবে উক্ত নামাজে গড়াগড়ি দিয়ে হলেও হাজির হত।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
শেষ কথা:
আমাদের সকলের নামাজের গুরুত্ব বোঝা উচিত, যা আমাদেরকে আখেরাতে নাজাত পেতে সাহায্য করে নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি।আমাদের উচিত সকল কাজের পূর্বে নামাজের গুরুত্ব। দেওয়া ফজর নামাজে অলসতা করে এত বেশি সাওয়াব আর নেকী রয়েছে যা নষ্ট করবেন না এবং সেই সমস্ত মাধ্যম অবলম্বন ব্যবহার করার চেষ্টা করা উচিত যা আমাদেরকে আল্লাহর হুকুমে ফজর নামাজের জন্য জাগিয়ে দিবে।