প্রেম করা ভাল না খারাপ

আসসালামু আলাইকুম  কেমন আছেন সবাই আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি আজকে আমি আপনাদের সাথে অসৎ প্রেম দমনের জন্য আরও কিছু জরুরী কাজনিয়ে আলোচনা করব !দুনিয়াতে আমরা কমবেশি সকলেই পাপ কাজে লিপ্ত আছি !   অসৎ প্রেম  থেকে রক্ষা করুক আল্লাহ আমাদের  সকলের  পাপ গুলো মাফ করুন !


 

কুদৃষ্টির অশুভ প্রতিক্রিয়া বশতঃ যদি অসৎ প্রেমে আক্রান্ত হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে এমতাবস্থায় উল্লেখিত বিষয়াদির পাশাপাশি আরও কয়েকটি কাজ করতে হবে।

১। ঐ মা’শূকের সাথে সর্ব প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। অর্থাৎ তার সাথে কথা বলা, তার প্রতি দৃষ্টি করা, তার সাথে উঠা-বসা করা, ফোন করা বা কখনও কখনও সাক্ষাত করা এসবকিছু সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে হবে। এমনকি, অন্য কেহ যদি তার কথা আলোচনা করতে শুরু করে তবে তাকে বাধা দিবে (অথবা সরে যাবে) এবং তার এত বেশী দূরে অবস্থান করবে ও এতটা দূরত্ব বজায় রেখে চলবে যাতে করে তার সাক্ষাতের সম্ভাবনাই না থাকে, বরং ভুলেও যেন তার উপর নজর পড়ার কোন সম্ভাবনাও না থাকে। মোটকথা, সম্পূর্ণরূপে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে।

২। যদি তার আগমনের আশংকা অনুভব হয়, তবে ইচ্ছাকৃতভাবে তার সাথে ঝগড়া করে নিবে, যাতে করে তার মনে বন্ধুত্ব রক্ষার আর কোন্ আশাই অবশিষ্ট না থাকে ।

৩। ইচ্ছাকৃতভাবে তার কথা স্মরণ করবে না। অতীতের বিষয়াদি স্মরণ করেও স্বাদ গ্রহণ করবে না। কারণ, এটা অন্তরের খেয়ানত যা অতি শক্ত গুনাহ্-গুনাহে কবীরা। এতে অন্তরের সর্বনাশ ঘটে যায় এবং এর ক্ষতি কুদৃষ্টির ক্ষতি অপেক্ষা বেশী মারাত্মক ।

৪। প্রেমের কবিতা, প্রেমের কাহিনী ও নভেল পাঠ করবে না। সিনেমা, টিভি, ভিসি আর, উলঙ্গ অশ্লীল ছবি বা যৌন উত্তেজনা উদ্দীপক ছবি দেখা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকবে এবং যেখানে উলঙ্গপনা, অশ্লীলতা ও নাফরমানী বিদ্যমান আছে তথা হতে দূরে থাকবে। নাফরমানদের সংস্রবে থাকবে না।

৫। দুনিয়াবী প্রেমিক-প্রেমিকাদের গাদ্দারী ও নিষ্ঠুরতার কথা স্মরণ করবে যে, কেহ তার প্রতি যতই ধন-দৌলত, মান ইয্যত ও প্রাণ উৎসর্গ করুক না কেন, কিন্তু যদি তার মন আরেক জনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যায় অথবা তুলনামূলক বেশী সম্পদশালী কেউ মিলে যায় তাহলে সে সাবেক প্রেমিক হতে দৃষ্টি সরিয়ে নিতে আদৌ পরোয়া করে না। এমনকি, অনেক সময় তার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বা অন্য-কথায় পথের কাঁটাসরানোর জন্য বিষ প্রয়োগ করে তাকে হত্যাও করে ফেলে ।

৬। চিন্তা করুন যে, ঐ প্রিয়জন যদি মারা যায় তাহলে আপনি দ্রুততর তাকে নিয়ে কবরস্থানে পৌঁছিয়ে দেন। আর যদি আপনার মৃত্যু আগে হয় তাহলে আপনার ঐ প্রিয়জন আপনার লাশ দেখে ঘৃণা বোধ করবে। অথবা যদি দুইজনের যেকোন একজনের শ্রী নষ্ট হয়ে চেহারা অসুন্দর হয়ে যায় তাহলে সমস্ত প্রেম-ভালবাসাই মুহূর্তের মধ্যে বরফে পরিণত হবে। তখন মনে হবে, হায়, এসবই ত ছিল এক প্রতারণা। এত ক্ষণস্থায়ী ক্ষণভঙ্গুর যে ভালবাসা, এও কি কোন্ ভালবাসা?
 جو سو بار ٹوٹے تو سو بار جورے
জো ছাও বার টুটে তো ছাও বার জোরে । অর্থ : পাপের প্রতি উদ্বুদ্ধকারী নছকে যদি তুমি পরাভূত করিতে না পার তবে হাত-পা ছাড়িয়া দিয়া বসিয়াও থাকিও না। এই নফছের সঙ্গে ত সারা জীবনই তোমার লড়াই চলিতে থাকিবে। তাই সে যদি কখনও তোমাকে পরাভূত করে তবে তুমিও তাহাকে পরাভূত করার চেষ্টা কর। কখনও সে পরাভূত করিল, কখনও তুমি পরাভূত করিলে। নছের বিরুদ্ধে লাড়াইয়ে তুমি জীবনভরও যদি শুধু ব্যর্থ আর ব্যর্থ হইতে থাক, তবে সত্য সত্যই যদি আমি আল্লাহ্ প্রেমিক হইয়া থাক, তাহা হইলে কিছুতেই তুমি চেষ্টা ত্যাগ দিবে না। যাহাতে আল্লাহ্র সাথে তোমার ভালবাসার এই বন্ধন অটুট থাকে জন্য তোমাকে চেষ্টা চালাইয়া যাইতেই হইবে। তাই ভালবাসার এ বন্ধনে যদি শত বারও ভাঙ্গন ধরে, তবে শত বার তুমি তাহা জুড়িয়া লও ।
হায়, নাহ্ ত ছাড়িলে না, অথচ আল্লাহকে ছাড়িয়ে দিলে? আরে, আল্লাহর সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করিয়া কোথায় যাইবে? আর কোন ঠিকানা আছে? অন্য কোন খোদা আছে?
نہ پوچھے سوا نیک کاروں کے گر تو کہاں جائے بندہ گنہگار تیرا
না পুছে ছেওয়া নেক্‌ক্কারোঁ কে গার তু কাঁহা জায়ে বান্দায়ে গোনাহগার তেরা।
অর্থ ঃ হে আল্লাহ্, আপনি যদি নেক্কার ব্যতীত আর কাহাকেও কোন পাত্তা না দেন, তবে আপনার গুনাহ্গার বান্দারা কোথায় যাইবে? কাহার নিকট আশ্রয় পাইবে?
বন্ধুগণ, নেক্কারদের যেই আল্লাহ্, গুনাহগারদেরও সেই একই আল্লাহ্ । আল্লাহকে বাদ দিয়া আমরা কোথায় যাইব? আর কোন ঠিকানা ত নাই । তাই, তওবা ও এস্তেগফারের সযত্ন প্রয়াস নেহায়েত জরুরী। যে কোন সময় কোন ভুল-চুক হইয়া গেলে অবশ্যই তওবা ও এস্তেগফার করিয়া নিবে।
পাপের পর মানুষ যখন তওবা করিতে চায় তখন শয়তান মনে মনে তাহাকে লজ্জা দেয় এবং বলে, তুমি কোন্ মুখে তওবা করিতেছ? তোমার শরম লাগে না, অথচ প্রতিদিন তুমি আবারও সেই কর্মই কর যাহা হইতে তওবা করিতেছ? আসলে ইহা প্রকৃত শরম নয় ।
أحببْ مَنْ شِئْتَ فَإِنَّكَ مُفَارِقُة (আহবিব মান শি’তা ফাইন্নাকা মুফারিকুহু।)
তুমি যাকে ইচ্ছা ভালবাস। একদিন তুমি তার থেকে অবশ্যই আলাদা হবে।
৭। এই ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখিত অন্যান্য সব কাজগুলো ঠিক ঠিক ভাবে আঞ্জাম দিবে। এতে করে আস্তে আস্তে তাকাযা (পাপের আগ্রহ) দুর্বল হতে থাকবে। এরূপ আকাংখা করবেনা যে, তাকাযা যেন একেবারেই নির্মূল হয়ে যায়। কারণ, কাম্য শুধু এতটুকুই যে, তাকাযা যেন এতটা কমজোর ও স্তি মিত হয়ে যায় যে, সহজেই তাকে কাবু করা যায় বা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। উল্লেখিত নিয়মাবলীর উপর আমল করলে ইন্‌শাআল্লাহ্ নছ্ একদিন কাবু হবেই, নিয়ন্ত্রণে আসবেই। এবং গায়রুল্লাহ্র মহব্বত হতে নাজাত নসীব হবেই। এবং হৃদয়-মনে এমন এমন নেআমত অনুভব হবে যা সর্বদা হৃদয়- মনকে আনন্দমত্ত ও নেশাগ্রস্ত রাখবে। অন্তরে এমন অনাবিল শান্তি অনুভব হবে যে, রাজা-বাদশারা কোনদিন তা স্বপ্নেও দেখতে পায় নাই। এবং এরূপ মনে হবে যে, একটা দোযখী-জিন্দেগী জান্নাতী-জিন্দেগী লাভ করেছে ।
نیم جاں بستاند و صد جاں دہر
 আঁচে দর অহমত নায়ায়াদ আঁ দেহাদ      
انچه در و ہمت نیاید آں دہر
নীম জাঁ বোস্তান্দ ওয়া ছদ জাঁ দেহাদ
আল্লাহ্র জন্য সাধনা ও কষ্ট স্বীকারের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ্পাকের জন্য আধা জান পেশ করে। তিনি তা গ্রহণ করেন এবং আধা জানের বদলে শত শত জান্ তাকে দান করেন এবং তার অন্তরে এমন-এমন নেআমত দান করেন যা তোমরা কল্পনাও করতে পার না।

দোআ করি, আল্লাহ্পাক উল্লেখিত নিয়মাবলীকে নছের যাবতীয় দুষ্টামী ও খারাবি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ‘উত্তম অবলম্বন' রূপে কবূল করেন। এর ওছীলায় গায়রুল্লাহ্র সকল সম্পর্ক থেকে মুক্ত করে দেন এবং আমার এই প্রচেষ্টাকে তিনি কবুলিয়তের মর্যাদায় ভূষিত করেন।
বিশেষ স্মর্তব্য-
প্রত্যহ দুই রাকাত নফল পড়ে খুব কাকুতি-মিনতির সাথে নছের এছলাহ্ ও তাকিয়ার জন্য আল্লাহ্ পাকের নিকট দোআ করবে। কারণ, আল্লাহ্ দয়া ও করুণা ব্যতীত কারুরই নফ্‌ছ পবিত্র হতে পারে না । আল্লাহ্র রহমত ও করম ব্যতীত এই নেআমত কেহই পেতে পারে না।
وَاخِرُ دَعْوَانَا أَنِ الْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَلَمِينَ
উপসংহার
আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুক! আল্লাহ যেন আমাদেরকে অসৎ প্রেম দমন করার সুযোগ দেন! এই অসৎ প্রেমের  কারণে আল্লাহ   আমাদের জন্য কত বড় শাস্তি   রাখছেন এগুলো বোঝার তৌফিক দান করুন! আশা করি  এই আর্টিকেলটি  পরে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছে!এরকম আরো ইসলামিক বিষয়ে জানতে  আমার এই ওয়েবসাইটটির সাথেই  থাকুন!

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال