পরকীয়া

সালামুআলাইকুম কেমন আছেন সবাই আশা করি ভাল আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি চলে আসছি আপনাদের সাথে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। এবং এই বিষয়টা অনেকেই জানতে চান বা অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন! আজকে আমি আপনাদের সাথে পরকীয়া কি, পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল, পরকীয়া হওয়ার কারণ বিষয়  আপনাদের  সঠিক টা জানানোর চেষ্টা করব পরকীয়া হচ্ছে মরণব্যাধি ক্যান্সার এর থেকে ভয়াবহ।ক্যান্সার তো শুধু একটি মানুষ কে আক্রান্ত করে কিন্তু পরকীয়া কয়েকটি পরিবার সমাজ জাতি কে আক্রান্ত করে।তাই আসুন আমরা এই পরকীয়া থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আল্লাহর প্রতি  তাওয়াক্কুল করি আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুক

 



পরকীয়া কি

 

পরকীয়া (ইংরেজি: Adultery বা Extramarital sex) হল বিবাহিত কোন ব্যক্তির (মহিলা বা পুরুষ) স্ত্রী বা স্বামী ছাড়া অন্য কোন মানুষের সাথে বিবাহ বহির্ভূত যৌন, প্রেম সম্পর্ক আমাদের এই সমাজে এটি লঘু বা গুরুভাবে নেতিবাচক হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।আমাদের  আধুনিক সমাজে পরকীয়া এর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বজায় থাকলেও এটি আইনত অপরাধ বলে ধরা হয় না, তবে যদি কেউ  অভিযোগ করে  আর সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরকীয়াকারী ব্যক্তির বিবাহিত সাথী তার সাথে ডিভোর্সের জন্য আদালতে আবেদন করতে পারেন। তবে ইসলামিক আইন অনুসারে ইসলামি রাষ্ট্রসমূহে এর জন্য কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে, যা হল পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড দেওয়া। মানসিক চিকিৎসা একথা  প্রমাণিত যে, বাবা- মার পরকীয়া বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এবং সমাজের সম্পর্ক যোগাযোগে অনেক বেশি প্রভাব ফেলে এবং পেরাই ক্ষেত্রেই তা সন্তানের মানসিক চাপ আগ্রাসী মনোভাবের জন্ম দেয়। এছাড়া পারিবারিক দাম্পত্য জীবন অবনতিতে পরকীয়া প্রভাব রাখে।

 অন্য পোস্ট:

                   * ব্রাজিল এখন কয়টা বাজে


পরকীয়া মানে কি

 

খবরের পাতায় এবং টেলিভিশন এর চলিত সংবাদে পরকীয়ার সম্বন্ধে প্রায় সময় বিভিন্ন খবর শুনে থাকি। পরকিয়ার জন্য খুনাখুনি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে পরকীয়া কি ?এবং নারী পুরুষ পরকিয়ায় জড়িয়ে পরেকিভাবে ? আর সম্বন্ধে ইসলাম কি বলে ? এর উত্তর হচ্ছে: পরকিয়া হচ্ছে একটি অসুখ এটি একটি সাজানো পরিবারকে সংসার ধ্বংস করে দেয় এবং ভয়াবহ অপরাধের জন্ম দেয়। এই পরকীয়া পারিবারিক জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করে। বিয়ার পরে অন্য স্বামী বা স্ত্রীর সুন্দর মনে হওয়া এবং তাঁর সাথে প্রেম করা অসামাজিক সম্পর্কের কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়াকেই পরকিয়া বলে।

 

পরকিয়া সম্পর্ক কয়েকটি কারনে হয়ে থাকে। তার ভিতরে কিছু কারণ নিচে দেওয়া হল-

 

জামাই বউর চাহিদাকে গুরুত্ব না দেওয়া। এবং তার প্রতি, শারীরিক সম্পর্কে এবং ভালো ব্যবহারের  প্রতি গুরুত্ব না দেওয়া। স্ত্রী স্বামী কি চায় তার চাওয়া পাওয়ার প্রতি গুরুত্ব না দেওয়া। এর মধ্যে হতে পারে স্বামীর সাথে ভালো ব্যবহার করে না, স্ত্রী স্বামীর শারীরিক সম্পর্কে অস্বীকৃতি সহ স্বামীর যৌন কার্যে সাড়া না দেওয়া।সকল কারণ বিবাহিত নারী পরপুরুষ বিবাহিত পুরুষ পরনারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। কেননা, একজন মহিলা কিংবা পুরুষমানুষ তাঁর কাঙ্ক্ষিত মানুষকে দিয়ে তাঁর চাওয়া বা মনের চাহিদা পূরণ করতে না পারে তখন তাঁর বিপরীত কাউকে খুঁজে নেয়।

এমনটি এগুলো দেখা যায় বিবাহিত পুরুষদের মধ্যেও স্ত্রীর অবহেলার স্বীকার হয়ে পরকীয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যায়। এরপরে তাদের মধ্যে চলতে থাকে প্রেম, এমন কি যৌন সম্পর্কের দিকেও তারা আঘাতে থাকে এবং সকল বিষয় গুলো মহিলা পুরুষদের মনে নেশার মতো কাজ করে। তাঁরা কি করছে সেসব দিকে খেয়াল থাকে না। এবং সকল পরকীয়া থেকে তাঁরা সহজে বের হতে পারে না। 

একারণেই ইসলামে পরকীয়া  এর শাস্তি অত্যান্ত কঠিন। ইসলামে হত্যার করার পরেই ব্যভিচারের শাস্তির অবস্থান রয়েছে ইসলামে অবিবাহিত মহিলা পুরুষের  অবৈধ সম্পর্কের শাস্তি বেত্রাঘাত হলেও যদি কোন বিবাহিত মহিলা কিংবা পুরুষ বিয়া করা পরেও অবৈধ সম্পর্ক করে তাহলে তাঁর সাজা হচ্ছে পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড দেওয়া।

পরকীয়া থেকে কিভাবে স্বামী- স্ত্রী বাঁচাবে এবং স্ত্রী কেমন করে স্বামীকে বিষাক্ত পরকীয়া থেকে বা  পর মহিলার আসক্ত থেকে রক্ষা করবে সে রকম কিছু আর্টিকেলে লেখার চেষ্টা করছি  পুরো আর্টিকেল পড়লে আপনারা জানতে পারবেন।

 

পরকীয়া থেকে মুক্তির আমল

 

খোদাভীরুতা : ইসলাম সর্ব প্রথম স্বামী-স্ত্রীকে খোদাভীরুতা, কৃতকর্মের দুনিয়াবিমুখতার জবাবদিহিতার ভয় অর্জনের প্রতি জোর তাকিদ দিয়েছেন। কারণ তারা সকল গুণে গুণান্বিত হলে দাম্পত্য সম্পর্কে আল্লাহ আইন কে অমান্য করবে না। পর মহিলা পর পুরুষে আসক্ত হবে না। আল্লাহতালা বলেন, ‘হে সকলমানুষ ! তোমরা তোমাদের সৃষ্টি কর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে বানিয়েছেন এবং তিনি তার থেকে তার জীবনসঙ্গিণীকে বানিয়েছেন। আর বিস্তার করেছেন তোমাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ মহিলা। (সূরা নিসা-)

নৈতিক শিক্ষা : ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে ইসলামিক শিক্ষা অর্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। কারণ মানুষের চাহিদা অসীম তাদের চাহিদার শেষ নেই অসীম জগতে তা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই দাম্পত্য জীবনে তারা যদি অপরের প্রতি ধৈর্যশীল সহানুভূতিশীল হয়, সুখ-দুঃখ আনন্দ মনে মেনে নেয়, আল্লাহর দেওয়া শারীরিক , মানসিক শক্তি-সামর্থ্যের ওপর সন্তুষ্ট থাকে, তাহলে তাদের ভিতরে কেউ কখনো পরকীয়ায় জড়াবে না। দাম্পত্য জীবন হচ্ছে আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার হিসাবে মনে করবে।

পরস্পরে ভালোবাসা :একে অপরের প্রতি পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং পরস্পরের আকর্ষণ কমে না যায় এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে স্বামী-স্ত্রীকে ইসলাম আদেশ দিয়েছে। কখনো একই পাত্র থেকে খাবার গ্রহণ করা। একে অপরের মুখে আহার তুলে দেওয়া। স্বামীকে কোন বিষয় চিন্তিত দেখলে তাকে সান্ত্বনা দেওয়া সাহস জোগানো স্ত্রীর দায়িত্ব। কিছু সময় একে অপরের সাথে একান্তে কাটানো। ভালোবাসার কথাবার্তা বলে ভালোবাসা প্রকাশ করা। নিজেদের মধ্যে শারীরিক অথবা মানসিক কোনো ধরনের দূরত্ব  তৈরি হওয়ার সুযোগ না দেওয়া।

দৃষ্টি সংযত রাখা : পর মহিলা অথবা পর পুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি দেওয়া, তাদের সঙ্গে দেখা করা, নরম ভাষায় কথা বলা, অবাধে মেলামেশা ইত্যাদি থেকে কঠিন ভাবে নিষেধ করেছে ইসলাম। আল্লাহ পাক বলেন : হে নবি ! আপনার উম্মতকে বলুন, তারা যেন তাদের  নজর নিচে রাখে এবং তাদের রাজস্থান হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য উত্তম। ইমানদার ভিলা মহিলাদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গ হেফাজত করে। (সূরা নূর ৩০-৩১)

 

 উপসংহার 

 

আমাদের সমাজ থেকে পরকীয়া নামক ব্যাধি দূর করতে হলে সবাই মিলে চেষ্টা চালাতে হবে। জন্য ইসলামের  আদেশ- নির্দেশ গুলো ফলো করতে হবে। বিশেষ করে দেশের প্রতিটি  নারী এবং পুরুষকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। তাদের মধ্যে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করতে হবে। সর্বোপরি বিষয় হচ্ছে পরকীয়া সম্পর্ককারীদের কঠিন কঠিন আইনের আওতায় আনতে হবে। এবং আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে পরকীয়া সম্পর্কে বোঝার এবং এর কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সঠিক টা জানার তৌফিক দান করুন। আমীন।

 

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال