নারীর সৌন্দর্য

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাইআশা করি ভাল আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব নারীর সৌন্দর্যের লীলা নিয়ে কিছু কথা নারীর সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে আমার আজকের আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।



নারীর সৌন্দর্যের লীলা 

দুনিয়ার মোহনীয়-কমনীয় রূপ-লাবণ্যের প্রতি, স্বাদ-গন্ধের প্রতি কতনা লালায়িত মোহাবিষ্ট ছিলাম। কবর ঘরে প্রবেশ করিতেই দুনিয়ার হাকীকত খুলিয়া গেল, কল্পিত সব আসলই এখানে ঘৃণিত নকল রূপে ধরা পড়িল হায় পরিতাপ, সে বিভ্রান্তিপূর্ণ মিথ্যা কাহিনীর এক স্বপ্নপুরী ছিল।


অন্য পোস্ট: 

 মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী (রঃ) বলেন :

 হে যুবক-তরুণেরা, শোন, লাবণ্যময়ী, রূপবর্তী যে ষোড়শী যুবতী অদ্য তোমাদিগকে পাগল করিতেছে, কামুক রঙে-ঢঙে তোমাদের প্রিয় দ্বীন-ঈমানকে ধ্বংস করিতেছে, তোমাদের দৃষ্টিকে লজ্জাহীন চরিত্রহীন করিতেছে, একটিবারও উহার সর্বনাশা পরিণতি তোমরা ভাবিয়া দেখিতেছ কি? আমরা স্বীকার করি যে, এশকের মত সুগন্ধ ছড়ানো ঘনকালো কোঁকড়ানো কেশদাম যৌবন দ্বারা উহারা তোমাদেরকে পাগলকারিণী, তোমাদের বিবেক-বুদ্ধি হরণকারিণী বটে। কেন স্বীকার করিব না, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই বলিয়াছেন যে, নারীরা যদিও জন্মগতভাবেই স্বল্পবুদ্ধিশীলা, কিন্তু ইহারা বড় বড় বুদ্ধিমানের বুদ্ধি-বিবেক হরণকারিণী। কিন্তু শোন, আজ যে নারীর সুগন্ধ ছড়ানো কোঁকড়ানো কেশদাম বিবেক-বুদ্ধি হরণ করিয়া তোমাকে বোকা বানাইয়া দিতেছে, ইহার পরবর্তী একটা ঘৃণিত পরিণতিও তো আছে? যখন তাহার বয়সসীমা ৭০/৮০ বৎসরের কোঠায় পৌঁছিবে, সাড়ে পাঁচ নম্বরের চশমা লাগাইয়া লাঠি ভর দিয়া কোমর বাঁকাইয়া ছোবড়ার মত দাঁতশূন্য মুখখানা লইয়া হাটিবে- চলিবে, সেদিনের তাপসীরূপী বুড়িকে দেখিয়া এক কালের সেই রূপসীকে তুমি এই তাপসীর মধ্যে আর খুঁজিয়া পাইবে? ইনিই সেদিনের সেই রূপসী যার কেশরাজি হাজার যুবক-তরুণকে পাগল করিয়া রাখিয়াছিল। অদ্য তাহাই বৃদ্ধ গাধার বিশ্রী-বীভৎস লেজে পরিণত হইয়াছে। মাওলানা রুমীর কবরকে আল্লাহপাক নূরে ভরিয়া দিন। তিনি যদি বৃদ্ধ গাধার লেজের সহিত তুলনার

স্থলে জোয়ান গাধার লেজের উল্লেখ করিতেন তাহা হইলে কিছু কিছু আহাম্মক লোক ইহাতেই হয়তঃ ধোঁকাগ্রস্থ' হইয়া যাইত যে, আরে, কিছু এখনও আছে। তাই, বৃদ্ধা-নারীর চুলকে তিনি বুড়া-গাধার সহিত তুলনা করিয়াছেন যাহা শুনিয়া অন্তরে ঘৃণা পয়দা না হইয়া পারে না। আত্মিক ব্যাধি সমূহের সফল চিকিৎসায় মনস্তত্বে পারদর্শিতা অপরিহার্য। একবার ১৯৭৬ইং সনে ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দের প্রধান মুফ্তী হযরত মুফতী মাহমুদ হাসান গঙ্গুহী ছাহেব করাচীতে শুভাগমন করেন। আমি তাঁহাকে মুহূর্তে তৈরি আমার একটি তাজা ছন্দ শুনাইয়াছিলাম যাহা একটু পরেই পরিবেশিত হইবে। তৎপূর্বে মর্মস্পর্শী আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ছন্দ পেশ করা হইতেছে-

 

প্রিয়তমা জ্ঞানে যারে, করেছ নাদানী, কোমর বাঁকিয়া আজি তিনি এক নানী সুদর্শন রতন সেই চন্দ্ৰ মুখ খানা, ওই যে চাহিয়া দেখ তিনি এক নানা তাজাতর ছন্দে অতি সংক্ষেপে সেই সর্বনাশা চিত্রটাই অঙ্কন করা হইয়াছে।

যে, আজকের বালক কয়েকদিন পর তরুণ হয়, আবার যৌবনে পা দেয়। আজকের ছোট্ট মেয়েটি অল্পদিন পর তরুণী, যুবতী, ষোড়শী হয়। এভাবে শৈশবের পর তারুণ্য আসে, তারুণ্য শেষ হইয়া যৌবনকাল আসে। যৌবনও স্থায়ী থাকে না। একদিন যৌবন খতম হইয়া বার্ধক্য আক্রমণ করিয়া বসে। দাঁত পড়িয়া যায়, দেহ ভাঙ্গিয়া যায়, গর্দান নুইয়া যায়। কোমর ঝুঁকিয়া পড়ে। মুখ, ওষ্ঠ, কেশদাম সর্বাঙ্গের সৌন্দর্য-সৌষ্ঠব বিগড়াইয়া বিকৃত হইয়া নিশ্চিহ্ন হইয়া যায়। আবার বার্ধক্যের অপ্রিয় আক্রমণের পর একদিন মৃত্যু আসিয়া নিষ্ঠুর থাবা মারিয়া বসে। যৌবন গেল, সৌন্দর্য গেল। সকল উম্মাদনা ঠাণ্ডা হইয়া গেল। কালক্রমে একদিন জীবনের ক্ষীণ বেলাটুকুও হঠাৎ নিভিয়া গিয়া স্বপ্নপুরীর সকল খেলাই সাঙ্গ করিয়া দিল। সকল উচ্ছ্বাস উম্মাদনার চিরদিনের তরে ইতি টানিয়া দিল। সূর্যের নিত্যকার উদয়-অস্ত শত-সহস্র তরুণ-তরুণীর, যুবক- যুবতীর সুদর্শন আকৃতিকে বিকৃত করিয়া দিতেছে, রূপ-লাবণ্য কাড়িয়া নিতেছে। সূর্যের উদয়-অস্ত দিবারাত্রের পরিবর্তন আমাদের কালো চুলকে সাদা করিয়া দেয়, আমাদের দন্ত সমূহকে মুখের বাহিরে সরাইয়া দেয়। আমাদের গাল কপালে ভাঁজ ঢালিয়া কুঞ্চিত করিয়া দেয়। ভ্রুযুগলকে নীচে লটকাইয়া দেয়। কোমল-সুদর্শন চেহারাসমূহ ভাঙ্গিয়া সুদর্শনকে কদাকার কুদর্শন বানাইয়া

দেয়। সূর্যের উদয়-অস্তের প্রভাবে কালের অবিরাম পরিবর্তন যদি সূচিত না হইত তবে কোন বস্তুই আমাদের সৌন্দর্য কমনীয়তা ছিনাইয়া নিতে পারিত না। তাই যখন ক্ষণস্থায়ী জীবনের অবসান ঘটিয়া জান্নাতে প্রবেশ নসীব হইবে, সেখানে চির কান্তিমায়ন, চির সজীব দেহ, যৌবন রূপ-লাবণ্য দান করা হইবে, যাহা আর কোন দিন ক্ষয় হইবে না। সেখানে বার্ধক্য আসিবে না, চুল শ্বেতবর্ণ হইবে না, মুখ ধ্বসিবেনা, দাঁতও পড়িবে না। কারণ, সেখানে সূর্য নাই, উদয়াস্ত

নাই, দিবারাত নাই, সপ্তাহ-মাস নাই, বৎসর নাই, দিন-তারিখ কিছুই নাই তাই সেখানে অবাঞ্ছিত পরিবর্তন নাই, ক্ষয় নাই, পতন বা বিয়োগও নাই।

 হযরত মুফতী ছাহেবকে যেই তাজা ছন্দটি শুনাইয়াছিলাম তাহা হইল

 অর্থাৎ মনোহর সুগন্ধ ফুলে-ফলে সুশোভিত জীবন-যৌবনের গুলিস্তানকে

বুলবুলির ন্যায় খোদার প্রিয় বান্দা-বান্দীরা যেন কোন রকম ধোকায় পড়িয়া অপরিণামদর্শীতার শিকার হইয়া বরবাদ না করিয়া ফেলে। কারণ, সাবধান, হে বুলবুলিরা, রূপ-লাবণ্য জীবন-যৌবনের এগুলিস্তান একদিন শুষ্ক শ্রীহীন মরুদ্যানে পরিণত হইবে। 

 উপসংহার

পরিশেষে আমরা এতটুকু জানতে পারলাম  নারীর সৌন্দর্যের লীলা। তাই, এমন যেন না হয় যে, কোন বুলবুল বোকার মত ধোকাগ্রস্ত হইয়া এমন কোন ফুলের আকর্ষণে অমূল্য জীবনকে বিসর্জন করিয়া বসে, যে ফুল একদা শুকাইয়া যাইবে এবং অবশ্যই একদিন ঝরিয়া পড়িবে আমার এই আর্টিকেলটা সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এরকম  অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে আমার এই ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকুন আল্লাহ হাফেজ।



Previous Post Next Post

نموذج الاتصال