আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন ,আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি । আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব নফল নামাজের গুরুত্ব নিয়ে ।
আল্লাহ তাআলা মানুষ এবং জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। মানুষের জীবনের প্রতিটি কাজ ও প্রয়োজনগুলো আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের সুন্নত মোতাবেক হবে, তখন তাঁর প্রতিটা কাজ বান্দর ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে এবং বান্দা এতে সওয়াব লাভ করবে। কিন্তু তারপরও প্রত্যেকটি মুসলিমের মৌলিক ইবাদত রয়েছে, যেগুলো করতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের করতে আদেশ দিয়েছেন। তার মধ্যে অনেক নফল ইবাদত রয়েছে। কারণ, নফল ইবাদতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তাআলার নিকটে পৌঁছাইতে পারে।প্রত্যেকটি মুসলমানের ইচ্ছে জান্নাতে হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সঙ্গে থাকতে। এর চেয়ে বড় চাওয়া পাওয়া আর কী কিছু হতে পারে? সাহাবি রবিয়া আসলামি (রা.)-এর একটিই চাওয়া ছিল - জান্নাতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সঙ্গলাভ। নবীজির জিজ্ঞাসা করলেন আর কী চাই হে রবিয়া। উত্তর আগেরটাই, জান্নাতে আপনার সঙ্গলাভ।
বিশেষ কোন সুযোগ পেলে বড় কারও কাছে মানুষ বিশেষ কিছুই চায়। আবার তিনি যদি নিজেই চাইতে বলেন, তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। তবে চাওয়ার সুযোগ পেলে চাইতে ও তো জানতে হয়। আসুন,আমরা রবিয়া আসলামি (রা.)-এর কাছ থেকে শিখে নেই, কখন কী কিভাবে চাইতে হয়।
এ চাওয়া গুলো তখনই বাস্তব প্রকাশ পাবে , যখন একজন মুমিন বেশি বেশি আল্লাহর সামনে সিজদা তথা নফল নামাজ আদায় করবে।কারণ হল, হাদিস শরিফে এসেছে, কোন বান্দা যখন সিজদা করে তখন ওই বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে। তো বান্দা যত বেশি আল্লাহর নিকটবর্তী হয় তার মর্যাদা আল্লাহ তত বেশি বাড়িয়ে দেয়। আল্লাহ যে বান্দার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন তার গোনাহ কি মাপ করা বাকি রাখবেন? না, আল্লাহ তার গোনাহগুলো মাপ করা বাকি রাখবেন না।
বেশি বেশি নফল এবাদাত জান্নাত লাভের মাধ্যম
মাদান ইবনে আবু তালহা (রা.) বলেন, আমি নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আজাদকৃত ( মুক্ত করে দেওয়া) গোলাম ছাওবান (রা.)- এর সাথে দেখা করে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে এমন ইবাদত এর কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে! তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ইবাদাত এর কথা বলে দিন। এভাবে তিন বার জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, আমিও নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ বিষয়েভাবে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছেন—
‘তুমি বেশি করে নফল নামাজ আদায় কর। কেননা তোমাদের প্রতিটা সিজদার বিনিময়ে আল্লাহ তোমাদের একটি করে মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং একটি করে গোনাহ মাপ করে দেবেন।’
মাদান বলেন, অন্য সময়ে আমি আবু দারদা (রা.)-এর সাথে দেখা হলে তাকেও এ বিষয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি, তিনিও একই রকম উত্তর দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৮৮)
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার নবী মোহাম্মদ(সা.) তাকে বলেছেন- জেনে রাখো, তোমার প্রতিটা সিজদার পরিবর্তে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন এবং একটি গোনাহ মাফ করে দেবেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২২০)
অথার্ৎ, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকরে আসরের নামাজ পরেনা তার শাস্তি জন্য এ হাদীসটি প্রমাণ। আসর এর নামাজকে কে বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ হলো, সারা দিনের সকল কাজ, ব্যস্ততার পর মানুষের মধ্যে ক্লান্তি চলে আসে। তাই আসর এর নামাজ পড়ার প্রতি অনেকের আলসেমি দেখা যায়। আবার অনেকে দেরিতে পড়ে থাকেন। আর আলসেমির কারণে এই নামাজ ছুটে যাওয়া এবং অন্য নামাজ ছুটে যাওয়ার চাইতে অনেক বেশি নিন্দনীয়।
কারণ, আসর হলো সালাতুল উসতা অর্থাৎমধ্যবর্তী নামাজ যা সঠিক সময় বিশেষ গুরুত্বর সাথে পড় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আল্লাহতালা বলেন, ‘তোমরা নামাজগুলো, বিশেষ করে আসরের নামাজ হিফাযত করো।; (সূরা বাকারাহ, আয়াত, ২৩৮)
আসরের সালাত ছেড়ে দেয়ার শাস্তি হলো, তার আমল নষ্ট হয় এবং সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। কেউ কেউ বলেন, যে ব্যক্তি এটির ফরজ হওয়াকে শিকার না করে ছেড়ে দেয়। তখন তার আমল নষ্ট হওয়ার মাধ্যম উদ্দেশ্য হলো কুফর।
কিছু আলেম এই হাদীসের মাধ্যমে দলিল দিয়েছেন যে, যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ছাড়লো সে কুফরি করল। কারণ, কুফর ছাড়া অন্য কোন কিছু আমল নষ্ট করতে পারে না। আবার কেউ বলেন, এটি হুমকি অথবা সতর্কতা ও গুরুত্ব বোঝার জন্য বলা হয়েছ। অর্থাৎ যে ব্যক্তি তা ছেড়ে দিল কেমন যেন তার আমল নষ্ট হয়ে গেলো। এটা আসরের সালাতের বিশেষ ফযীলত।
উপসংহার
আমাদের সকলের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের গুরুত্ব বোঝা পাশাপাশি নফল নামাজ এর নামাজের গুরুত্ব বোঝা উচিত, যা আমাদেরকে আখেরাতে নাজাত পেতে সাহায্য করে নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি।বেশি বেশি নফল এবাদাত জান্নাত লাভের মাধ্যম। আমাদের উচিত সকল কাজের পূর্বে নামাজের গুরুত্ব দেওয়া। ফজর নামাজে অলসতা করে এত বেশি সাওয়াব আর নেকী রয়েছে যা নষ্ট করবেন না এবং সেই সমস্ত মাধ্যম অবলম্বন ব্যবহার করার চেষ্টা করা উচিত যা আমাদেরকে আল্লাহর হুকুমে ফজর নামাজের জন্য জাগিয়ে দিবে। এবং নফল নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক । এরকম আরো প্রয়োজনীয় বিষয় জানতে আমার এই ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন । আল্লাহ হাফেজ