হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই?  আশা করি ভাল আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কিছু কথা । সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে জানতে আমার আজকের আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।



আল্লাহ চাহে তো আমি এখন মানুষের হতাশা এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলব। বিষয়গুলো প্রতিটি মানুষের জন্যই জানা প্রয়োজন, চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম। আমি আপনাদের যেটা বলব সেটা হলো-আপনারা প্রত্যেকেই নিজের জীবন নিজে যাপন করুন। অন্যের জীবন যাপন করতে যাবেন না। অন্যের জীবন যাপন করা বন্ধ করুন। এটা আসলেই একটা গুরুতর সমস্যা। আমাদের অনেকেই হতাশা ও কষ্টে ভুগি। কারণ, আমরা যে জীবন যাপন করতে চাই সেটা আমাদের না। আমরা দেওয়ালের ওপর মাথা উঁচিয়ে অন্য বাড়ির খবর জানার চেষ্টা করি। দেখি, ওপারে কী হচ্ছে, দেখে দেখে অনেক সময় নষ্ট করি। আমি আপনাদের এসব কাজের প্রশংসা করছি না। আদর্শিক নীতিবাক্যও বলছি না। আমি শুধু ব্যাপারগুলো আপনাদের নজরে আনতে চাই।

যেমন, ফেসবুক। ফেসবুক হালাল না কি হারাম আমি সেটা বলছি না। আমি ফেসবুকে খুব একটা থাকি না। আমি এ ব্যাপারে খুব এক্সপার্টও না। তবে প্রাথমিক বিষয়গুলো জানা আছে। তাতে বুঝেছি, সেটা আমাদের জীবনে অপ্রয়োজনীয় দুঃখবোধ ও কষ্ট সৃষ্টি করে। কেন আপনি অন্যের জীবনযাপন নিয়ে চিন্তা করবেন,


যেখানে আপনি আপনার নিজের জীবন নিয়ে ভাবার পান না সময় ! আমি খুবই অবাক হয়ে যাই, যখন দেখি পুরো পৃথিবী আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর আমি কী করি? কী খাই? কী আছে? এসব অন্যকে দেখানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। বন্ধু, তুমি এসব তুচ্ছ ব্যাপারে ব্যস্ত হয়ে কী পেয়েছ? আমি বুঝি না মানুষ এসব করে কী আনন্দ পায়! আসলে মানুষ এক কৃত্রিম জীবন বেছে নিয়েছে। এমনকি অনেক দীনি ভাইও এরকম করে। ঠিক এভাবে কিচচ... করে সেলফি তোলে! (হাতে মোবাইল নিয়ে বিশেষ ভঙ্গিতে সেলফি তোলার অভিনয় করে দেখান, বক্তা ব্রাদার হোবলস, দর্শক হেসে ওঠে)। আমার কাছে খুব অবাক লাগে, মানুষ ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠেই কীভাবে ফেসবুকে ছবি আপলোড করার জন্য পাগল হয়ে যেতে পারে? আরে ভাই, তখন তো আপনার চোখের ময়লাগুলোও থেকে যেতে পারে চোখের কোনায়! ছবি বাছাই করা হয় আবার গ্যালারি থেকে। কোন ছবিটা বেশি সুন্দর, অসংখ্য ছবি থেকে তা ঠিক করা হয়। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে সেজন্য ছবি তোলা হয়। ফেসবুকে এভাবে আমরা নিজেদের জীবন অন্যের সামনে তুলে ধরি। অন্যের জন্য জীবন সাজাই। অন্যের জীবন যাপন করি।


আমরা নিজেদের বিভিন্ন উপলক্ষ্যের ছবি তুলে ধরি। ছুটির দিনের ছবি, বিশেষ দিনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড দিই। ভাই আমাদের প্রত্যেকেরই আলাদা জীবন রয়েছে। আপনি যদি ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সুখীও হন, সেসব সবার সামনে প্রকাশ করা উচিত নয়। কারণ, কেউ সেসব দেখে আপনাকে ঘৃণা করা শুরু করবে। কেউ আপনার যা আছে তা পেতে লোভাতুর হয়ে পড়বে। কেউ ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়বে। কেউ আপনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে শুরু করবে। আর এসব করে থাকে বেশিরভাগ বিবাহিত মানুষেরা। কেন তারা এসব করে? তারা এসব এজন্য করে-কারণ, তারা নিজেদের জীবন যাপন করে না। নিজের জন্য নয়, তারা অন্যের জন্য বাঁচে।

আল্লাহ যদি আপনাকে সপ্তাহে ৫০০ ডলার খরচ করার সামর্থ্য দেন, তো সেটাতেই সন্তুষ্ট থাকুন। সপ্তাহে ৩০০০ ডলার ইনকাম করা লোককে দেখে আফসোস করার কিছু নেই। আল্লাহ আপনাকে সেরকম সামর্থ্য দেননি ভাই! তাই, ওয়াল্লাহি! ভাই আফসোস করার কিছু নেই। আল্লাহ চান যে, তিনি আপনাকে যা দেননি তা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন না করেন। এটা করলেই আপনার জীবন কঠিন হয়ে যাবে।

ভাই, আপনি সারা দিন বাইরে বাইরে থাকেন। এদিক সেদিক হাঁটাহাঁটি করেন।


রাস্তাঘাটে বন্ধের দুনিয়া দেখেন। মেয়েদের সাথে কথা বলেন, ঠেলাঠেলি করেন। তারপর বলেন, ভাই আমার স্ত্রী আমার কাছে ভালো লাগে না। আমার বউয়ের ব্যাপারে বিতৃষ্ণা এসে গেছে। হ্যাঁ, আপনার বউ-বিতৃষ্ণা আসবেই। কারণ আপনার যা দেখার কথা, তা দেখেন ১০% আর যা দেখার কথা না, তা দেখেন ৯০%। রাস্তাঘাটে অন্যলোকের বউ দেখে বেড়ান। আল্লাহ যা আপনাকে দিয়েছে তার দিকে চোখ ফিরিয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার সময় পর্যন্ত পান না। আপনি এমন জিনিস দেখেন, যা আপনার নয়। আপনি এমন জীবন দেখেন, যা আপনার নয়। আপনি এমন জীবন যাপনের আশা করেন, যা আপনার নয়। ওয়াল্লাহি! আপনি এমন জীবন যাপন করুন যেটা আপনার জন্য মানানসই  হয় ।

আমি জানি না কে কীভাবে দেখছেন। তবে আমি এগুলো আমার দেখা অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। মানুষ ঘন্টার পর ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাটিয়ে দিচ্ছে। তারা কি ক্লান্ত হয় না? আপনার জীবনে কি সত্যিই কিছু করার নেই? মানুষ এখন অনেক বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমমুখী। কে কীভাবে নেবে জানি না। তবে আমি সত্যটা বলেই যাব! আমি কারও পরোয়া করব না। কে আমার কথার প্রতিবাদ করল, কে আমার কথার সাথে একমত হলো-আমি সত্যিই পরোয়া করব না।

মেয়েরা অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসক্ত। তারা ফেসবুকে ছবি আপলোড করেই কেমন হলো জানতে চায়। তাদের বলব-বোন! আপনাকে অমুক-তমুক বানাননি, আল্লাহ বানিয়েছেন। ফেসবুকে অমুক-তমুকের মন্তব্য আপনার প্রয়োজন নেই। আপনি যেমন হলে সুন্দর হবেন আল্লাহ সেভাবেই আপনাকে বানিয়েছেন। অন্যের কাছে কোনোভাবে আপনি সুন্দর লাগবেন না। যারা আপনাকে পছন্দ করে না, তারা জাহান্নামে যাক! আল্লাহ তায়ালা আপনাকে যেভাবে চেয়েছেন বানাতে, আপনাকে বানিয়েছেন।

আল্লাহ চেয়েছেন আপনাকে খাটো বানাতে, তাই আপনি খাটো হয়েছেন। আবার আল্লাহ যাকে চেয়েছেন লম্বা বানিয়েছেন। আল্লাহ যার সাথে চেয়েছেন আপনার বিয়ে হয়ে গেছে। আপনার বৈধ জীবনসঙ্গী করে দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্যদিকে আপনার ভালো লাগা কাজ করে কেন? আল্লাহ আপনার জন্য যা ভালো মনে করেছেন তা-ই করেছেন। এর মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে। সত্যিই ভাইয়েরা আমার! আল্লাহ আমাদের যা দিয়েছেন তাই যথেষ্ট। তাই আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করুন। তাঁর প্রতি সুধারণা করুন। জীবনটাকে বদলে ফেলুন। এসব সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নিজেকে নির্ভর করবেন না।


হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়াহতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়াহতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়াহতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া,হতাশা এবং সোশ্যাল মিডিয়া


Previous Post Next Post

نموذج الاتصال