ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন ও মুসলিম সমাজ

আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।


আমার
ভাই বোনেরা, আমরা নতুন বছর থেকে আর মাত্র কয়েক দিন দূরে অবস্থান করছি। এই সময়ে এসে আমাদের নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, এই 'নিউ ইয়ার ইভ' একজন মুসলিমের জন্য পালন করা উচিত কি না?


সত্যি কথা বলতে মুসলিমদের জন্য এই 'নিউ ইয়ার ইভ' পালন করার কিছু নেই। কোনো অজুহাত দেখিয়েই দিবস পালন করা যায় না। এর কোনো গুরুত্ব ইসলামে নেই।


আমাদের প্রিয় নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিবস উদ্যাপনের দিনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আমাদের উদ্যাপনের জন্য ইদুল ফিতর দিয়েছেন, যা রামাদান মাসের ঠিক শেষ দিন পরে আসে। তিনি আমাদের ইদুল আজহা উদ্যাপন করতে বলেছেন। যা ঠিক হজের শেষে আসে। ছাড়াও আমাদের জন্য প্রতি জুমাবার বা খুতবার দিন দিয়েছেন উদ্যাপনের জন্য। বিশেষ দিন হিসেবে ইমানদারদের জন্য জুমার দিনও অনেক আনন্দের।

তাই ভাই বোনেরা, কীভাবে আমরা 'নিউ ইয়ার ইভ' পালন করায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি?

সংক্ষেপে যদি বলি-বলব, এসব থেকে দূরে থাকুন। এই জাতীয় কোনো দিবস পালন করার প্রয়োজন নেই। এই দিবস উদ্যাপন করা স্থানগুলোতে রাতের বেলা যাবেন না। আল্লাহর অপছন্দনীয় এরকম স্থানগুলো থেকে দূরে থাকুন। যেখানে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা হয়, অবাধে মদপান করা হয় অথবা জাতীয় কর্মকাণ্ড হয়, সে স্থানগুলো থেকে দূরে থাকুন।


আমার ভাই বোনেরা, 'নিউ ইয়ার ইভ'-এর রাতে যদি কোনো বিশেষ কিছু করতে চান তাহলে আমি বলব, নিজেকে কিছু প্রশ্ন করুন। থার্টি ফার্স্ট নাইটে যদি কিছু করতেই হয় তাহলে নিজেকে নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবুন। একটু ভাবুন! পুরো একটি বছর কীভাবে কাটিয়ে দিলেন?

নিজেকে প্রশ্ন করুন-আমি কীসব কাজ করেছি?


কী কী নেক আমল করেছিজীবনের লক্ষ্য ধরে কোথায় যাচ্ছিএক বছর পরই যদি আমার মৃত্যু হয় সেজন্য আমার এই নেক আমল কি যথেষ্ট?


উম্মাহর জন্য ইতিবাচক কী অবদান আমি রেখেছি? থার্টি ফার্স্ট নাইটের কোনো গুরুত্ব যদি থাকে, তাহলে এভাবেই আমি তার মূল্যায়ন করব।


এই রাত হওয়া উচিত নিজেকে নিয়ে ভাবার রাত। এই রাত হওয়া উচিত অনুতপ্ত হবার রাত। এই রাত হওয়া উচিত আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার রাত। গত একটি বছর আমার কৃত সকল গুনাহের মাফের রাত। নতুন বছরের জন্য এই শপথ গ্রহণই আমার কাছে থার্টি ফার্স্ট নাইটের করণীয়।


এরকম একটি বর্ণনার যোগসূত্র পাওয়া যায় উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুর একটি বিখ্যাত বক্তব্য থেকে। তিনি প্রায়ই বলতেন, নিজেকে নিজে মূল্যায়ন করো অন্যের


মূল্যায়নের মুখে পড়ার আগেই। নিজেকে নিজে বিচার করো আল্লাহর বিচারের মুখোমুখি হবার আগেই। নিজেকে নিজে যাচাই করো আল্লাহর যাচাই-বাছাইয়ের মুখে পড়ার আগেই।


তাই আমার ভাই বোনেরা, আমাদের উচিত নিজেদের দিকে তাকানো এবং নিজেকে প্রশ্ন করা যে-একটি পুরো বছর পার হয়ে গেল, কিন্তু আমি কী অর্জন করলাম? আমি কোথায় যাচ্ছি? আসন্ন বছরে (২০১৬) আমি নতুন কী কী করতে যাচ্ছি? কীভাবে আমি নিশ্চিত করব যে, আমার আসন্ন বছরটি গত বছরের তুলনায় ভালো হবে? যদি গত বছর (২০১৫) আমার কোনো দাড়ি না থাকে বা হিজাব না থাকে, তাহলে আগামী বছরে আমার সিদ্ধান্ত কী হবে? যদি গত বছর আমার জীবনে কোনো কুরআন না থাকে, কোনো সালাত না থাকে অথবা জাতীয় কোনো অপূর্ণাঙ্গতা থাকে, তবে বছর আমার করণীয় কী? তাহলে নতুন বছরে আল্লাহ তায়ালার কাছে আমার ওয়াদা হবে-আমি আমার অপূর্ণাঙ্গতাগুলো কাটিয়ে উঠব।


আপনি সত্যিই যদি 'নিউ ইয়ারস ইভ'- নতুন কিছু করতে চান, তাহলে আমি আপনাকে দৃঢ়ভাবে পরামর্শ দেবো, আপনি রাতটিকে ইবাদতের রাতে পরিণত করুন। রাতকে আপনি আল্লাহর সাথে ওয়াদার রাতে পরিণত করুন। রাতকে উম্মাহর জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করার রাতে পরিণত করুন।


এই ছিল আপনাদের সাথে নতুন বছর উদ্যাপন প্রসঙ্গে আমার কথা। আজকে এখানেই শেষ করছি। আবার কথা হবে। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন। আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

 

ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,

ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ

ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ,ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপন মুসলিম সমাজ

 

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال